Thank you for trying Sticky AMP!!

ফেরিঘাটে প্রচণ্ড ভিড়ে দলছুট হয়ে বিপাকে পড়ছেন অনেকে

ঈদ উপলক্ষে ভিড় ঠেলে মানুষ গ্রামের বাড়ি ফিরছেন। সোমবার সকালে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ আজ সোমবারও রাজধানী ছেড়ে গ্রামে ছুটছেন। ফেরিঘাটে ভিড় এড়াতে শেষরাতে সাহ্‌রি খেয়ে অনেক রওনা হয়েছেন গ্রামের বাড়ির পথে। ঘাটে এসে ফেরিতে উঠতে গিয়ে প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে অনেকে সফরসঙ্গী হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন। আজ সকালে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এমন চিত্র চোখে পড়ে।

স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঝিনাইদহের মহেশপুরে যাচ্ছেন ঢাকার মতিঝিল থেকে আসা রিকশাচালক আশরাফুল ইসলাম। আজ ভোরে সাহ্‌রি খেয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে আসেন ঢাকার গাবতলী। সেখান থেকে লোকাল বাসে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে নামেন নবীনগর বাসস্ট্যান্ড। এরপর বাসে করে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে আসেন। আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষার পর সকাল পৌনে নয়টায় একটি ছোট ফেরিতে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স উঠতে দেখে শত শত যাত্রী হুমড়ি খেয়ে পড়েন। আশরাফুল ইসলামও এক হাতে মেয়েকে ধরে অপর হাতে ব্যাগ নিয়ে ফেরিতে উঠে পড়েন। ফেরি ছাড়ার পর দেখেন তাঁর স্ত্রী নেই। ভিড়ে খোঁজ নিতে পারেননি। নদী পাড়ি দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছালে তাঁর স্ত্রীর অন্য একজনের মোবাইল থেকে কল করে জানান, তিনি ফেরিতে উঠতে পারেননি।

সোমবার সকালে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটের চিত্র

আশরাফুল ইসলাম বলেন, মানুষের ভিড়ে অনেক কষ্ট করে মেয়েকে নিয়ে ফেরিতে উঠতে পারলেও তাঁর স্ত্রী রাবেয়া খাতুন উঠতে পারেননি। এখন পাটুরিয়া ঘাট থেকে কখন ফেরি ছাড়বে, সেই অপেক্ষায় আছেন। কয়েক দিন পর ঈদ। কষ্ট হলেও গ্রামের সবার সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি ফিরছেন তাঁরা।

ফেরিঘাটে ছোট শিশুসন্তান ও লাগেজ নিয়ে বসে আছেন গৃহবধূ সালমা বেগম। আলাপকালে তিনি বলেন, তাঁর স্বামী ঢাকার মতিঝিল এলাকায় একটি কারখানায় কাজ করেন। দিনে ফেরি বন্ধের খবর পেয়ে ভোরে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা। অটোরিকশা নিয়ে গাবতলী থেকে লোকাল বাসে করে পাটুরিয়া ঘাটে নামেন। তিনি আগেভাগে ফেরিতে উঠতে পারলেও তাঁর স্বামী উঠতে পারেননি।

ঠেলাঠেলি করে ফেরিতে উঠতে গিয়ে আশরাফুল ও সালমার মতো অনেকেই যাত্রাপথের সঙ্গী হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে ফেরি থেকে নেমে গন্তব্যে ছুটছেন যাত্রীরা। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে

এদিকে ঢাকামুখী বেশ কিছু গাড়ি ফেরির জন্য দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। বেনাপোল থেকে লোহার কুচি বোঝাই করে কাভার্ড ভ্যান নিয়ে রওনা হয়েছেন বিল্লাল হোসেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম যেতে হবে। খুব সকালে ঘাটে এসে পৌঁছালে টিকিট না দেওয়ায় ঘাটের লম্বা লাইনে আটকে আছেন। দিনের বেলায় সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ির টিকিট দিচ্ছে না বলে প্রায় ২০০ গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় আটকে আছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. ফিরোজ শেখ বলেন, সকাল ছয়টার পর থেকে সন্ধ্যা ছয়টার আগপর্যন্ত সাধারণ গাড়ি, মোটরসাইকেল বা যাত্রী পারাপার নিষেধ রয়েছে। শুধু জরুরি গাড়ি পারাপার হবে। তাহলে মোটরসাইকেলসহ অসংখ্য যাত্রী পারাপার হচ্ছে কীভাবে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব দেখভাল করবে পুলিশ। ঈদের সামনে জরুরি কিছু গাড়ি ফেরিতে উঠলেই মোটরসাইকেল ও সাধারণ যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এসব ঠেকানো মুশকিল হয়ে পড়েছে।