
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় বন্য হাতির দল এক কৃষকের ঘর তছনছ করে দিয়েছে। এ সময় এলাকার প্রায় পাঁচ একর জমির আমনের ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে দিয়েছে হাতির দল। গতকাল বুধবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার পানিহাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বন বিভাগের কর্মকর্তা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ নভেম্বর পানিহাটা গ্রামের ফেকামারি এলাকায় আড়াই বছরের একটি হাতির মৃত্যু হয়। এর পর থেকে হাতির দলটি তালতলা জঙ্গলে আছে। রাত নয়টার দিকে হাতির দলটি তালতলা জঙ্গল থেকে পানিহাটার বিশপ নগরে চলে আসে। এ সময় দলটি হাসমত আলী নামের এক ব্যক্তির থাকার ঘরে আক্রমণ করে। এ সময় হাসমত আলী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে যান। পরে সেখান থেকে হাতির দলটি পানিহাটা পাহাড়ের ঢালের ১৫–১৬ জন কৃষকের প্রায় পাঁচ একর জমির ধান খেয়ে ও মাড়িয়ে নষ্ট করে দেয়।
এ সময় বন বিভাগের গোপালপুর বিট কর্মকর্তাসহ এলাকাবাসী ও এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা মশাল ও টর্চলাইট জ্বালিয়ে, পটকা ফুটিয়ে ও হইহল্লা করে হাতির দলটিতে জঙ্গলে ফেরাতে চেষ্টা করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাতির দলটি আবার তালতলা জঙ্গলে চলে যায়।
কৃষক আবু হানিফ বলেন, হাতির দল আগুন ও মানুষ দেখেও ভয় পায় না। হইহল্লা করেও কাজ হয় না।
হাসমত আলী বলেন, ‘হাতির চিৎকার শুনেই আমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে দৌড়ে পালিয়েছি। এ সময় আমার থাকার ঘরটি হাতির দল ভেঙে ফেলেছে। পরিবার নিয়ে অন্যের বাড়িতে গিয়ে রাত কাটিয়েছি।’
গোপালপুর বিট কর্মকর্তা মো.শাহ আলম বলেন, ৪০ থেকে ৫০টি হাতি জঙ্গল থেকে লোকালয়ে নেমে আসে। এর পর থেকে আলো জ্বেলে গ্রামবাসীদের নিয়ে হাতি তাড়াতে চেষ্টা করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বন বিভাগের কাছে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো.আবদুল করিম বলেন, পানিহাটার তালতলা জঙ্গল থেকে প্রতি রাতে হাতির দলটি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে। এলাকাবাসীদের নিয়ে তাঁরা হাতি জঙ্গলে ফেরাতে কাজ করে যাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের থানায় জিডি করে বন বিভাগের ফরমে আবেদন করতে বলা হয়েছে। হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাবেন।