নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় লাঠিমিছিলের কারণে বিএনপির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে। শনিবার উপজেলা বিএনপির সমাবেশে আসার পথে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা বাধা দেওয়ার পাশাপাশি বিএনপির এক নেতাকে লাঠিপেটা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাগাতিপাড়ায় মালঞ্চি রেলগেটের পশ্চিম পাশে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি। শনিবার সকাল থেকেই ছাত্রলীগের একাংশ ও যুবলীগের কিছু কর্মী সেখানে অবস্থান নেন। দফায় দফায় তাঁরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের কর্মসূচিস্থলে আসতে বাধা দেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নেকবর হোসেন কর্মীদের নিয়ে কর্মসূচিস্থলে আসছিলেন। তিনি মালঞ্চি রেলগেটের ওপর ওঠামাত্র ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা লাঠি হাতে তাঁর ওপর চড়াও হন। তাঁকে রক্ষা করতে পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) একজন উপপরিদর্শক ও একজন সদস্য এগিয়ে এলে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। পরে বিএনপির এই নেতাকে প্যারাবাড়িয়া বাজারে নিয়ে কাঠের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। কর্মসূচিতে যোগ দেবেন না, এমন শর্তে তাঁকে লালপুরের দিকে চলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ বিএনপির।
এই ঘটনার পর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একাংশ প্যারাবাড়িয়া বাজারে লাঠি হাতে দফায় দফায় মিছিল করে। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কর্মীরা কর্মসূচিস্থলে আসতে না পারায় বিএনপির নির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। তবে দুপুরের দিকে তারা তমালতলা এলাকায় ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল করে।
বিএনপির নেতা নেকবার হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের একাংশের (সাংসদ-সমর্থিত) সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মোল্লা এবং যুবলীগের কর্মী আমানুর আমানের নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় তাঁরা তাঁকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। তাঁর এক পায়ের হাড় ভেঙে গেছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগের নেতা শহিদুল ইসলাম মোল্লা বলেন, রেলগেটের পূর্ব পাশে আগে থেকেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মসূচি চলছিল। সেখানে তাঁরা সারা দেশে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ-মিছিল করছিলেন। তবে এ সময় কাউকে তাঁরা মারপিট করেননি।
উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব হাফিজুর রহমান বলেন, বিএনপির কর্মসূচি সম্পর্কে আগেই পুলিশকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। পুলিশ সে অনুযায়ী কর্মসূচি এলাকায় অবস্থান নিয়েছিল, কিন্তু পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নেকবর হোসেনসহ অন্তত পাঁচজনকে আঘাত করেছে।