Thank you for trying Sticky AMP!!

ভারত সরকারিভাবে গম রপ্তানি বন্ধ করেনি: খাদ্যমন্ত্রী

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গম উৎপাদনকারী দেশ ভারত

উৎপাদন কম হওয়ার কারণ দেখিয়ে গম রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যে ভারতের আচমকা এ সিদ্ধান্তে বিশ্ববাজারে আটার দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ধাক্কা লাগতে পারে বাংলাদেশেও। তবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের দাবি, প্রতিবেশী দেশটি সরকারিভাবে গম রপ্তানি বন্ধ করেনি, বেসরকারি পর্যায়ে রপ্তানি বন্ধ করেছে।

Also Read: গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করল ভারত, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার আশঙ্কা

সিলেট সদরে খাদ্যগুদাম পরিদর্শনকালে আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। গম রপ্তানি নিয়ে ভারত সরকারের প্রজ্ঞাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারত গম রপ্তানি বেসরকারিভাবে বন্ধ করেছে। সরকারিভাবে রপ্তানি বন্ধ করেনি। প্রজ্ঞাপনে সেটি পরিষ্কার রয়েছে। অতএব এর জন্য খুব বেশি অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না। আর তাদের উৎপাদিত গম তাদের বিক্রি করতেই হবে। আজকে হয়তো প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। ১৫ দিন বা ১ মাস পর সেটি ফিরিয়েও নিতে পারে...। সুতরাং সেটি নিয়ে আগাম মন্তব্য করা ঠিক হবে বলে মনে করি না।’

Also Read: রাশিয়া, ইউক্রেনের পর ভারত থেকেও গম আমদানি বন্ধ

দেশ অনেকটাই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দাবি করে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, দেশে এক বছর ধরে কোনো চাল আমদানি করা হয়নি। উৎপাদিত ধান দিয়েই চালের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। গম আমদানি করতে হয়। গম বেসরকারিভাবে বেশি আমদানি হয়। সরকারিভাবে কম হয়। সরকারিভাবে যেটুকু গম আমদানি করা হয়, সেগুলো রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আনা হয়। ইতিমধ্যে ভারত থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন নিয়ে আসা হয়েছে। বাকি যেটুকু চাহিদা তা নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী খাদ্যমন্ত্রী।

ভোজ্যতেলের দাম বাড়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী সাধন চন্দ্র বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দামের সমস্যা শুধু বাংলাদেশের নয়। সারা বিশ্বে চিন্তা করলে কিংবা ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা ভালো। ভারতে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ২১০ রুপি করে বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে আমরা ভালো আছি। ভালো থাকা নয় আমাদের আরও ভালো থাকতে হবে।’

এবার সরকারিভাবে ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ২৭ টাকা। এ দামকে কম হিসেবে দেখছেন হাওরের কৃষকেরা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ধানের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। ধানের দাম বাড়ানো হলে চালের দাম বাড়বে। কৃষকদের বিভিন্নভাবে প্রণোদনা এবং ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। সার, বিদ্যুতে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। সব ভর্তুকির হিসাব করলে বীজ, সার নানাভাবে চিন্তা করলে ন্যায্য ও যৌক্তিক মূল্য দেওয়া হয়েছে। কৃষকেরা বাজারে যাতে ন্যায্যমূল্য পান কিংবা কোনো সিন্ডিকেট গড়ে উঠে যাতে মজুত করতে না পারে, সে জন্য ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

তেলের পাশাপাশি বাড়ছে পেঁয়াজের দামও। দাম বাড়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে সাধন চন্দ্র বলেন, এখন পেঁয়াজ কৃষকেরা উৎপাদন করছেন। সেগুলো বাজারে আছে। এর মধ্যে বেশি আমদানি করা হলে কৃষকেরা পেঁয়াজ উৎপাদন ছেড়ে দেবেন কিংবা ছেড়ে দিয়েছেন। পেঁয়াজের দাম আর বেশি উঠবে না। কারণ, টিসিবির মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এবার পাহাড়ি ঢলে হাওরে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বোরো ধানের ক্ষতি হলেও খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে না বলে দাবি করেছেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এবার হাওরে আবাদের জমির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। আশা করি যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তাতে খাদ্যের প্রবলেম হবে না। আমাদের মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বোরোর মজুত বাবদ শক্তিশালী মজুত গড়ে উঠবে বলে আমরা মনে করি। আউশের আবাদও ভালোভাবে হবে। যেহেতু সুবৃষ্টি আছে। আউশ লাগানোর মতো পরিবেশ আছে। বাংলাদেশে খাদ্যের ঘাটতি হবে এমন চিন্তা করা বেঠিক হবে।’

সিলেটে চাল সংরক্ষণের জন্য আধুনিক রাইস সাইলো স্থাপন করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। এ জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমানসহ খাদ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।