ভোটার তালিকায় নাম নেই তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যানের

দেবেশ চন্দ্র রায়
ছবি: সংগৃহীত

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনবার নির্বাচিত হয়েছিলেন দেবেশ চন্দ্র রায়। এবারও ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি। কিন্তু ভোটার তালিকায় দেখেন তাঁর নাম নেই। এই ঘটনা দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১১ নম্বর মরিচা ইউনিয়নে। বিষয়টি জানতে পেরে দেবেশ চন্দ্রের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। দেবেশ চন্দ্র নিজেও হয়েছেন হতভম্ব।

১৯৮৭, ১৯৯১ ও ২০০২ সালে ১১ নম্বর মরিচা ইউপির নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন দেবেশ চন্দ্র। তিনি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মহাদেবপুর গ্রামের ধনঞ্জয় রায়ের ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ২০১৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার ভোটার তালিকার সিডি গ্রহণ করে ভোটার নম্বর খুঁজতে গিয়ে দেবেশ দেখেন, তালিকায় তাঁর নাম নেই। পরে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখেন, মরিচা ইউনিয়নের পরিবর্তে ফুলবাড়ি উপজেলার ৭ নম্বর শিবনগর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম।

এ বিষয়ে দেবেশ চন্দ্র রায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বিরোধী পক্ষ আমাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিতে আমার স্বাক্ষর জাল করে ভোট স্থানান্তরের জন্য নির্বাচন কমিশন অফিসে আবেদন করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করেছি এবং তা সমাধানের পথে রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাটি পুরোপুরি ষড়যন্ত্রমূলক। এখানে আমি তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। ফুলবাড়ি উপজেলায় ভোটার হতে যাব কেন? আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি।’

উপজেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত আতাহারুল ইসলাম চৌধুরীসহ মোট পাঁচজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ভোটার স্থানান্তরের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে দেবেশ চন্দ্রের স্বাক্ষরিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র নিতে এসে এই পরিবর্তন দেখতে পেয়ে দেবেশ জানান, এই আবেদন তিনি করেননি। পরবর্তী সময়ে তা সংশোধনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। আজকালের মধ্যে তা সংশোধন করা হয়ে যাবে। তবে কী কারণে এমনটি ঘটেছে, তা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেশে চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩ ডিসেম্বর। ওই দিন ১১ নম্বর মরিচা ইউনিয়নেও ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৫ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৯ নভেম্বর এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ৬ ডিসেম্বর।