Thank you for trying Sticky AMP!!

মাদক দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই কারাগারে

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় এক নারীকে (৩০) মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগে বেগম সুফিয়া (৫০) নামের অপর এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার উপপরিদর্শক (এসআই) শ্যামল কুমার বর্মণ বাদী হয়ে সুফিয়া ও তাঁর ছেলে রফিকুল ইসলামকে (৩২) আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।

বদরগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে ওই নারীর (ভুক্তভোগী) বিয়ের পর দুটি সন্তান হয়। পরে স্বামী তাঁকে তালাক দেন। উপায় না পেয়ে ২০১৫ সালে তিনি ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। ২০১৭ সালে তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে পরিচয় হয় বদরগঞ্জের লোহানীপাড়া ইউনিয়নের মোসলমারী পানারহাট গ্রামের রফিকুল ইসলামের। ঢাকার বাইপাইলে ওই নারী একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতেন। পরবর্তী সময়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে রফিকুল সেখানে গিয়ে ওই নারীর সঙ্গে থাকতেন। এতে সম্প্রতি ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ১০-১২ দিন আগে রফিকুল ওষুধের মাধ্যমে তাঁর গর্ভপাত ঘটান। দীর্ঘদিনেও বিয়ে না করায় গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে ওই নারী রফিকুলের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবি জানান। এ সময় রফিকুল ও তাঁর মা বেগম সুফিয়া বাড়ির ভেতরে তাঁকে গাছে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। পরে রাতে তাঁর হাতে একটি ব্যাগ ধরিয়ে তাঁরা বদরগঞ্জ থানা–পুলিশকে খবর দেন।

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, গতকাল রাত ৯টার দিকে এক ব্যক্তি মুঠোফোনে জানান, ব্যাগভর্তি মাদকদ্রব্যসহ এক নারীকে ওই এলাকার লোকজন আটক করে রেখেছেন। খবর পাওয়ামাত্র সেখানে এসআই শ্যামল কুমার বর্মণকে পাঠানো হয়। পুরো ঘটনাটি সেখানে সাজানো বলে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে ভুক্তভোগী ওই নারীসহ বেগম সুফিয়াকেও গতকাল রাত ১০টার দিকে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। সেখান থেকে উদ্ধার করা ব্যাগে পাওয়া যায় ৪৩টি ইয়াবা বড়ি ও দুই লিটার চোলাই মদ।

ওসি হাবিবুর রহমান আরও জানান, থানায় জিজ্ঞাসাবাদে বেগম সুফিয়া স্বীকার করেন, ছেলে রফিকুলসহ তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে গাছে বেঁধে মারধর করার পর ওই নারীকে মাদকদ্রব্য দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন। পরে এ ঘটনায় এসআই শ্যামল কুমার বাদী হয়ে বেগম সুফিয়া ও তাঁর ছেলে রফিকুলকে আসামি করে মামলা করেন। বেগম সুফিয়াকে আজ আদালতের মাধ্যমে রংপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রফিকুলকে গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই নারীর সঙ্গে থাকা ও গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে রফিকুলের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করতে ভুক্তভোগী নারীকে মিঠাপুকুর থানায় পাঠানো হয়েছে। কারণ, পুরো ঘটনাটি ওই থানার অধীনেই ঘটেছে।

রাতে থানায় বেগম সুফিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলে রফিকুল বিবাহিত। তবুও সে (ভুক্তভোগী নারী) আমার ছেলের সঙ্গে প্রেম–ভালবাসা করে। আবার আমার বাড়িতে ঢুকে রফিকুলকে বিয়ে করতে বলে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গাছে বেঁধে আমরা তাঁকে একটু মারছি, যা করেছি তা ঠিক হয়নি। ভুল করেছি।’

তবে ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে রফিকুল। উল্টো বাড়ির ভেতরে আমাকে গাছে বেঁধে তাঁরা মা-ছেলে মিলে লাঠি দিয়ে আমাকে মেরেছে। এরপর মদের ব্যাগ হাতে দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। আমি ওঁদের কঠিন বিচার চাই।’