রাজশাহীতে ‘বাইক বাহিনী’র ছিনতাইয়ের শিকার এক নারী

রাজশাহী জেলার মানচিত্র
রাজশাহী জেলার মানচিত্র

রাজশাহী নগরে হঠাৎ ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। বেশির ভাগ ছিনতাইয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে মোটরসাইকেল। আর এসব ছিনতাইকারী নগরে পরিচিতি পেয়েছে ‘বাইক বাহিনী’ হিসেবে। নগরের রেলগেট এলাকায় আজ শুক্রবার দুপুরে এমন ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন এক নারী। ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে তাঁর ভ্যানিটি ব্যাগ। ইফফাত জাহান (৪১) নামের ভুক্তভোগী নারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক শাতিল সিরাজের স্ত্রী।

এ ঘটনায় নগরের বোয়ালিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন জানিয়ে ইফফাত জাহান বলেন, দুপুরে রেলগেট থেকে রিকশায় চড়ে নিউমার্কেট এলাকায় যাচ্ছিলেন তিনি। তখন অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি বাইক নিয়ে তাঁর ডান হাতে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান দেয়। ওই ব্যক্তি ভ্যানিটি ব্যাগটি নিয়ে দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। ভ্যানিটি ব্যাগে ১টি স্মার্টফোন ও ২ হাজার ৪০০ টাকাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সঠিক। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুতই ছিনতাইকারী ধরা পড়বে। ব্যাগও উদ্ধার হবে। এগুলো কোনো বাহিনীর কাজ নয়। বিছিন্নভাবে করছে। ধরাও পড়ছে।

৮ মে সন্ধ্যার পর নগরের প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট এলাকায় এক নারী হেঁটে যাচ্ছিলেন। তখন এক ছিনতাইকারী বাইক নিয়ে জনবহুল ওই স্থানে সেই নারীর ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান দেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন ধরে ওই ছিনতাইকারীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেন। জব্দ করা হয় মোটরসাইকেলটিও।

পুলিশ জানায়, ওই ছিনতাইকারীর নাম ফায়সাল রহমান (৩৬)। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় তাঁর বাড়ি। মা একজন স্কুলশিক্ষক, বাবা শিক্ষা কর্মকর্তা। মাদকের টাকা জোগাড় করতে ফায়সাল রাজশাহী এসেছিলেন ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে। ধরা পড়ার আগে একই দিনে ফায়সাল আরও তিনটি ছিনতাই করেন। সব মিলিয়ে ৪ হাজার ৩০০ টাকা ও কয়েকটি মুঠোফোন পান। জিরোপয়েন্টে ধরা পড়ার সময় এসব তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরদিন মামলা করে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মজিবর রহমান জিপিও থেকে স্থায়ী আমানতের ২৩ লাখ টাকা তোলেন। তারপর টাকার ব্যাগ নিয়েই নগরের বাটার মোড়ে জুতার শোরুমে ঢুকে জুতা পছন্দ করছিলেন। পাশে ব্যাগটি রেখে মজিবর রহমান ও তার স্ত্রী জুতা দেখছিলেন। তখনই এক ছিনতাইকারী তাঁর ব্যাগ নিয়ে দৌড় দেয়।

এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ওসি মাজহারুল বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে ছিনতাইকারীর চেহারার মিল পাওয়া গেছে। তবে সে স্বীকার করেনি। তাঁর রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো নজরে আনলে বোয়ালিয়া জোনের উপপুলিশ কমিশনার সাজিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। যেসব ঘটনা ঘটেছে, বেশির ভাগই আমরা ডিটেক্ট করে ফেলেছি। বাকিগুলোও ডিটেক্ট করে ফেলা হবে। জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।’