Thank you for trying Sticky AMP!!

লঞ্চের অগ্নিকাণ্ড ষড়যন্ত্রমূলক, দাবি মালিকের

আগুনে পুড়ে যাওয়া লঞ্চ

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন নৌযানটির মালিক হামজালাল শেখ। আজ শুক্রবার দুপুরে মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলার সময় এমনটাই দাবি করেন।

হামজালাল শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাউকে সন্দেহ করা যাবে না। কিন্তু অবশ্যই কোনো ষড়যন্ত্র আছে। ইঞ্জিনে আগুন লাগলে ইঞ্জিনরুম পুড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ওপরে বা আগুন সামনে যাওয়ার কথা নয়। যে–ই ঘটাইছে দ্বিতীয় তলা থেকে, লঞ্চের মাঝখান থেকে এই দুর্ঘটনা ঘটাইছে।’

অভিযান-১০ নামে এ লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে তিনটি তেলের ট্যাংকে প্রায় সাড়ে সাত হাজার লিটার তেল ছিল জানিয়ে হামজালাল শেখ বলেন, ‘সব আগুন নিভে যাওয়ার পরও তেল থাকার কারণে ইঞ্জিনরুমের আগুন আরও দুই ঘণ্টা জ্বলে। কিন্তু ইঞ্জিনরুমের আগুন সর্বোচ্চ দোতলা পর্যন্ত ওঠার কথা। এর ওপরে ওঠার কথা নয়। ইঞ্জিনরুমে অনেক সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। লঞ্চের লোকজন এসব আগুন নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে। অনেক সময় ইঞ্জিনে বিস্ফোরণ ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়।

লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়। কিন্তু কেবিন পর্যন্ত কখনো আগুন যায় না। এই প্রথম দেখলাম, আগুন কেবিন পর্যন্ত চলে গেল। কোন জায়গা থেকে গেল, কীভাবে গেল, একমাত্র আল্লাহ দেখছেন।’

Also Read: প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, লঞ্চটির ইঞ্জিনে ত্রুটি ছিল, চলছিল বেপরোয়া গতিতে

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি তদন্ত করলে অগ্নিকাণ্ডের কারণ বের হয়ে আসবে বলে জানান এই লঞ্চমালিক।

রাজধানীর সদরঘাট থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় বরগুনার উদ্দেশে ছেড়ে যায় অভিযান-১০ লঞ্চটি। দিনের বেলা ৭৬০ এবং রাতের বেলা ৪২০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতা ছিল লঞ্চটির। তবে বৃহস্পতিবার যাত্রীবাহী নৌযানটি ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন করছিল বলে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা জানান। এটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পৌঁছালে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। প্রথমে লঞ্চটিকে সুগন্ধার উত্তরপাড়ে চর বাটারকান্দায় নোঙর করার চেষ্টা করা হয়। সেখানে সম্ভব না হওয়ায় নদীর দক্ষিণপাড়ে ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দিয়াকূল গ্রামে নোঙর করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, আগুন লাগার পর লঞ্চটিকে তীরে ভেড়াতে ৪৫ মিনিটের বেশি সময় লাগে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই লঞ্চটিকে তীরে ভেড়ানো সম্ভব হলে প্রাণহানি এড়ানো যেত বলে মনে করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঢাকা-বরগুনা নৌ রুটে বর্তমানে ছয়টি লঞ্চের রুট পারমিট রয়েছে। মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির এমভি অভিযান-১০ ছাড়া বাকি লঞ্চগুলো হচ্ছে মেসার্স খান ট্রেডার্স ও মেসার্স সুরভী পরিবহনের যৌথ মালিকানায় রাজারহাট-বি, পূবালী-১ ও শাহরুখ-২, রাজহংস-৮। এমভি ফারহান-৮–এর মালিক জাতীয় পার্টির সাংসদ গোলাম কিবরিয়া।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং অধিক মুনাফার জন্য মালিকেরা রোটেশন পদ্ধতিতে লঞ্চ পরিচালনা করেন। এ পদ্ধতির কারণে যাত্রীর চাপ থাকলেও প্রতিদিন উভয় প্রান্ত থেকে মাত্র দুটি লঞ্চ চালানো হয়।