সিলেট–৩ আসনে উপনির্বাচন

শফির প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা জুনেদ বহিষ্কৃত

বিএনপির লোগো
বিএনপির লোগো

সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া শফি আহমদ চৌধুরীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জুনেদ আহমদকে বহিষ্কার করেছে জেলা কমিটি।

বুধবার রাতে সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। জেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল আহাদ খান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা বিএনপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের সিদ্বান্ত অমান্য করে সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শফি চৌধুরীর পক্ষে কাজ করার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জুনেদ আহমদকে প্রাথমিক পদসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

বহিষ্কারের আগে জুনেদ আহমদকে পাঁচ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শফি চৌধুরীর পক্ষে দলের সিদ্বান্ত অমান্য করে কাজ করার প্রমাণ পাওয়ায় জুনেদ আহমদকে ২৩ জুন শোকজ করে পাঁচ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব না দেওয়া এবং জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় জুনেদ আহমদের প্রদত্ত বক্তব্য গ্রহণযোগ্য ও সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

এ ব্যাপারে জানতে রাতে জুনেদ আহমদের মুঠোফোনে কল করলে তিনি ধরেননি। তবে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বহিষ্কারের বিষয়টি জুনেদ জেনেছেন বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শফি আহমদ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ যেসব বিএনপি নেতা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন জুনেদ। তাঁকে বহিষ্কার করায় অন্য নেতাদের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। এতে করে ফেঞ্চুগঞ্জ বিএনপির একটি অংশ দল ত্যাগ করতে পারে।

সিলেট নগরের উপকণ্ঠের তিনটি উপজেলা দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ নিয়ে সিলেট-৩ আসন। এ আসন থেকে বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন শফি আহমদ চৌধুরী। তিনি এ আসন থেকে ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে সাংসদ হন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যপদে থাকা শফি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে ১৯ জুন বহিষ্কার করা হয়। পরদিন ২০ জুন শফি আহমদ চৌধুরী প্রথম আলোকে এক প্রতিক্রিয়ায় ‘ইলেকশনে না গিয়ে বিএনপির অবস্থা মুসলিম লীগের মতো হয়ে যাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেন।

জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, প্রথম আলোর অনলাইনে প্রকাশ হওয়া শফি আহমদ চৌধুরীর প্রতিক্রিয়ার এ খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এক দিন পর ২১ জুন রাতে জেলা বিএনপি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শফি আহমদ চৌধুরীর বক্তব্যকে ‘অসত্য ও বানোয়াট’ বলে তীব্র নিন্দা জানায়। ওই সময় শফি চৌধুরীর অনুসারী বিএনপি নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়।

গত ১১ মার্চ করোনায় সিলেট-৩ আসনের সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী মারা যান। এরপর ১৫ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, ২৪ জুন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। প্রতীক বরাদ্দ হয়েছে ২৫ জুন। আগামী ২৮ জুলাই ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে।

এ আসনে শফি আহমদ ছাড়াও আওয়ামী লীগ মনোনীত হাবিবুর রহমান, জাতীয় পার্টি মনোনীত আতিকুর রহমান ও বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।