
শেরপুরে ৬ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের কন্যাশিশুর জন্ম দিয়েছেন এক নারী। আজ বুধবার বিকেলে শহরের নারায়ণপুর এলাকার জেনি জেনারেল প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। সদ্য প্রসূত শিশুটির নাম রাখা হয়নি এখনো। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে এত বেশি ওজনের শিশুর জন্ম বিরল বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
নবজাতক শিশুটির মায়ের নাম শেফালী বেগম (৩০)। বাবার নাম সজল মিয়া (৩২)। তাঁদের বাড়ি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার দহেরপাড় গ্রামে। শেফালী গাজীপুরের একটি তৈরি পোশাক কারখানার কর্মী, আর তাঁর স্বামী সজল গাজীপুরে অটোভ্যানচালক হিসেবে কাজ করেন।
জেনি জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জায়েদুর রশীদ শ্যামল প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা তিনটার দিকে অসুস্থ অবস্থা নিয়ে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা শেফালী বেগম তাঁর হাসপাতালের ২০৩ নম্বর কক্ষে ভর্তি হন। পরে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে সিনিয়র গাইনি বিশেষজ্ঞ মো. লুৎফর রহমান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শেফালীর গর্ভ থেকে একটি কন্যাশিশু ভূমিষ্ঠ করান। অস্ত্রোপচারে সহযোগিতা করেন অবেদনবিদ মো. জসিম উদ্দিন।
জন্মের পরপরই শিশুটির ওজন পাওয়া যায় ৬ কেজি ২০০ গ্রাম, যা স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে অনেক বেশি। অস্বাভাবিক ওজনের শিশুর জন্মের খবর পেয়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স ও অন্য রোগীর স্বজনেরা শিশুটিকে দেখতে ভিড় করেন।
একটি নবজাতকের স্বাভাবিক ওজন হয়ে থাকে আড়াই কেজি থেকে চার কেজি পর্যন্ত। কিন্তু এই শিশুটির ওজন ৬ কেজি ২০০ গ্রাম। এটি প্রায় বিরল।
নবজাতকের বাবা সজল মিয়া রাত ৮টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি গাজীপুর থেকে বাসে শেরপুরে আসছেন। এটি তাঁদের তৃতীয় সন্তান। তাঁর ঘরে আরও দুই ছেলেসন্তান রয়েছে। পরিবারে কন্যাশিশু জন্ম নেওয়ায় তিনি খুব খুশি বলে জানান।
শিশুটির মামা সঞ্জু মিয়া বলেন, তাঁর বোন ও ভাগনি দুজনেই সুস্থ আছে। তবে ৬ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের সন্তান হওয়ার কথা এর আগে তিনি কখনো শোনেননি।
গাইনি বিশেষজ্ঞ মো. লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ৬ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের নবজাতক এই প্রথম তিনি দেখলেন, যা স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে অনেক বেশি। এটি প্রায় বিরল। তিনি আরও বলেন, নবজাতক শিশুটি সুস্থ আছে। তবে তার মায়ের অবস্থা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ। প্রসূতিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট কোহিনুর জাহান শ্যামলী প্রথম আলোকে বলেন, একটি নবজাতকের স্বাভাবিক ওজন হয়ে থাকে আড়াই কেজি থেকে চার কেজি পর্যন্ত। কিন্তু এই শিশুটির ওজন ৬ কেজি ২০০ গ্রাম। এটি প্রায় বিরল। তিনি বলেন, সাধারণত গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে অথবা বাবা-মার ওজন বেশি থাকলে অধিক ওজনের শিশুর জন্ম হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রসূতি ও নবজাতকের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিশুটির অধিক ওজন হওয়ার কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।