Thank you for trying Sticky AMP!!

সালিসে জমি দিয়ে কিশোরীকে বিয়ে করে ধর্ষণের ঘটনার মীমাংসা

ধর্ষণের প্রতীকী ছবি

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ৫ শতাংশ জমির বিনিময়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে কিশোরীর বিয়ে দিয়ে মীমাংসা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে এ মীমাংসা করা হয়।

গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে অভিযুক্ত আল আমিনের বাড়িতে মেয়েপক্ষের লোকজন নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত নারী সদস্যের স্বামী টিপু হাওলাদার, স্থানীয় মাতব্বর সোহেল ফরাজী, রোকন, সোহেল, দেলোয়ার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন সালিসের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করেন।

গ্রাম্য সালিসের মাতব্বর টিপু হাওলাদার বলেন, উভয় পরিবারের মানসম্মানের কথা ভেবে ধর্ষণের ঘটনাটি মীমাংসা করা হয়েছে।

ওই কিশোরীর বাবা বলেন, ‘সালিসদারদের চাপে এ ঘটনা মীমাংসা করতে বাধ্য হয়েছি। আমরা অসহায়, তাই এলাকায় মানসম্মান নিয়ে থাকতে হবে।’

এর আগে গতকাল সকালে ওই কিশোরীকে অচেতন অবস্থায় একটি বাগান থেকে উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। পরে কিশোরীর জ্ঞান ফিরলে সে জানায়, আল আমিন খান (২৬) গত বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত আল আমিন ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালান। ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। এতে মেয়েটি রাজি হয়নি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আল আমিন তাঁর দুই মামাতো ভাইকে নিয়ে মেয়েটির বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। কিশোরীকে ধর্ষণ করেন আল আমিন। পরে অচেতন অবস্থায় রাস্তার পাশে একটি বাগানে মেয়েটিকে ফেলে রাখা হয়। গতকাল সকালে মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন।

মাতব্বরদের ভাষ্য, কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় সালিসে উপস্থিত সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে তাকে বিয়ে করতে রাজি হন আল আমিন। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে স্থানীয় কাজি ডেকে দুই লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে পড়ানো হয়। মেয়ের নামে ৫ শতাংশ জমি দলিল করে দিতে আল আমিন লিখিত চুক্তিও করেন। মেয়েটির বিয়ের বয়স না হওয়ায় রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও বিয়ের তারিখ দেখাননি কাজি মো. জহিরুল ইসলাম।

স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ‘টিপু হাওলাদার ও তাঁর ভাই দেলোয়ার শুক্রবার সকালে আমার কাছে এসে ঘটনা মীমাংসা করে দিতে বলেন। আমি পরিষ্কার বলে দিয়েছি, স্কুলছাত্রী ধর্ষণের মীমাংসা এখানে হবে না। তোমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার(ইউএনও) কাছে যাও।’

ভুক্তভোগী বা তার পরিবারের কেউ থানায় আসেননি বলে জানান নলছিটি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মফিজুর রহমান। থানার ওসি মো. আলী আহম্মেদ বলেন, ‘স্কুলছাত্রী ধর্ষণের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। পরে শুনেছি, গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে ঘটনার সুরাহা হয়ে গেছে।’