
মাদারীপুরের ডাসারে মানব পাচার মামলা জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব বোতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন নাসির হাওলাদার (৩৩), সালাম হাওলাদার (৫৫), সালমা বেগম (৫০), আলো বেগম (৫৫), কামাল হাওলাদার (৪৫), সবুজ হালাদার (৩৮), হাফিজ হাওলাদার (৬০), আসাদ হাওলাদার (৪৮), জামাল হাওলাদার (৪৫), মৌসুমী বেগম (২২) ও তানিয়া বেগম (২৬)। সবার বাড়ি পূর্ব বোতলা এলাকায়।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, দুই বছর আগে হাবিব হাওলাদারের ছেলে সিয়াম হাওলাদার অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়েন। স্থানীয় দালাল নাসির হাওলাদার তাঁকে সহযোগিতা করেন। লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে সিয়াম নিখোঁজ হন। আর তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় সিয়ামের পরিবার মানব পাচার আইনে নাসিরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। এর পর থেকেই উভয় পরিবারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
গতকাল বিকেলে সালাম হাওলাদারের বাড়িতে তাঁর মায়ের মিলাদ অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠান শেষে নাসির হাওলাদার ও তাঁর সহযোগীরা নিখোঁজ সিয়ামের চাচাতো ভাই হানিফ হাওলাদার, তাঁর স্ত্রী আলো বেগমসহ বাড়ির লোকজনের ওপর দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এ সময় বাড়ির একটি ঘরে ভাঙচুরও করা হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত ১১ জনকে রাত নয়টার দিকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে ডাসার থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে।
আহত সবুজ হাওলাদার বলেন, ‘মিলাদের অনুষ্ঠান শেষ করে নাসিরের নেতৃত্বে রফিক, সালামসহ শতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা সিয়ামের বংশের লোকজন। মানব পাচার মামলার সাক্ষী। এ কারণে ওরা আমাদের টার্গেট করে হামলা করেছে। আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। নাসির স্থানীয় দালাল। তারা বলেছে, জেলে গেলে আমাদের মেরেই তারপর তারা জেলে যাবে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এলাকার লোকজন তার প্রতিবাদ করেছে। এখানে আমার কোনো দায় নেই। আমি কোনো হামলার সঙ্গে জড়িত নই।’
ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো. এহতেশামুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে জমিজমা নিয়ে হাওলাদার বংশের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এ কারণেই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি আপাতত শান্ত রয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেয়নি। তারা অভিযোগ দিলে পুলিশ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।