কারাগার
কারাগার

পুলিশ সদস্যকে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার বিরুদ্ধে মামলা, পরে কারাগারে

নরসিংদীর শিবপুরে থানার ভেতর দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্যের গালে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবিদ হাসান ওরফে জজ মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ভুক্তভোগী কনস্টেবল সবুজ মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ওই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আবিদ হাসান শিবপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব ও মাছিমপুর ইউনিয়নের পুবেরগাঁও এলাকার বাসিন্দা। ওই মামলায় তাঁকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

মামলা দায়েরের পর আজ বেলা তিনটার দিকে আবিদকে জেলা আদালতে তোলা হয়। এ সময় বিচারক পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিবপুর থানা কমপ্লেক্সে হাজতখানার সামনে আটক হন আবিদ হাসান। অপারেশন ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তার জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আওয়ামী লীগ–সমর্থিত চেয়ারম্যান নাদিম সরকারকে ছাড়াতে তদবির করার জন্য থানায় গিয়েছিলেন তিনি। ঘটনার পর আবিদকেও আটক করে হাজতখানায় রাখা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত থানার হাজতখানায় সেন্ট্রির দায়িত্ব পালন করছিলেন কনস্টেবল সবুজ মিয়া। এ সময় ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ আটক ব্যক্তিদের থানায় আনা হচ্ছিল। তাঁদের মধ্যে নাদিম সরকারও ছিলেন। ওই সময় আসামিদের দেখতে অনেক লোক থানায় ভিড় করেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে দলবল নিয়ে আবিদ হাসান থানাহাজতের সামনে অবস্থান নেন। তিনি নাদিম সরকারসহ অন্য আসামিদের দেখার কথা বলে তাঁদের ছবি তুলছিলেন। একপর্যায়ে নিজের মুঠোফোন ব্যবহার করে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সঙ্গে আসামিদের কথা বলিয়ে দিচ্ছিলেন। ওই সময় কনস্টেবল সবুজ তাঁকে বাইরে যেতে বলেন। কিন্তু নিষেধ অমান্য করে আবিদ আবারও মুঠোফোনে আসামিদের কথা বলিয়ে দিতে যান। এতে বাধা দিলে সবুজের গালে থাপ্পড়ের পাশাপাশি কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন আবিদ। পরে ওই পুলিশ সদস্য ফ্লোরে পড়ে গেলে তাঁর অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এ থানায় কীভাবে চাকরি করেন, দেখে নেব।’

শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেনকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি আবিদকে আটকের নির্দেশ দেন। ওসি বলেন, থানায় গিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আবিদ হাসানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হারিস রিকাবদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবিদ হাসানকে গ্রেপ্তারের খবর শুনেছি। তবে ঘটনার বিস্তারিত এখনো জানি না। কেন আওয়ামী লীগ নেতার জন্য সে থানায় গিয়েছিল, তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা–ও জানি না।’ ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের কোনো ঘটনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব ঘটনা তো অত্যন্ত গোপনে ঘটে। এখানে এমন কিছু ঘটেছে কি না, তা–ও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।