
শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২তম সিনেট অধিবেশন থেকে বের হয়ে যাওয়া ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিগার সুলতানা পদত্যাগ করেছেন। আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান বরাবর তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রোববার বিকেল সোয়া চারটার দিকে আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আমি নোট করে উপাচার্য বরাবর পাঠিয়ে দিয়েছি। পদত্যাগপত্রে তিনি ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছেন।’
এদিকে আজ বেলা ১১টার দিকে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের একদল শিক্ষার্থী অধ্যাপক নিগার সুলতানার পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে ডিন কার্যালয়ের সামনে পোস্টার সাঁটিয়ে দেন।
ওই পোস্টারে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ‘ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন হিসেবে আপনার (নিগার সুলতানা) কার্যক্রম এবং অবস্থান ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থের পরিপন্থী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে আপনার পক্ষপাতদুষ্ট এবং অগণতান্ত্রিক আচরণ ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদকে কলুষিত করেছে। আপনার নেতৃত্বে অনুষদের পরিবেশ ন্যায়বিচারহীনতা, স্বেচ্ছাচারিতা ও শোষণের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বেচ্ছায় ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিনের পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। এই সময়সীমার মধ্যে পদত্যাগ না করলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সর্বাত্মক গণ–আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হব এবং এর সব দায়দায়িত্ব আপনার ওপরই বর্তাবে।’
এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট অধিবেশনে যোগ দিতে আসেন অধ্যাপক নিগার সুলতানা। এ সময় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতা-কর্মী ও বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা সিনেটে থাকতে পারবেন না জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে সিনেট হলের ফটকের সামনে গিয়ে আওয়ামীপন্থী তিন শিক্ষকের নাম ধরে স্লোগান দিলে একে একে অধ্যাপক নিগার সুলতানা, অধ্যাপক মো. শফিক-উর রহমান, অধ্যাপক যুগোল কৃষ্ণ সিনেট হল থেকে বের হয়ে যান। তাঁরা তিনজনই ক্যাম্পাসে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এরপর আজ ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিগার সুলতানা পদত্যাগ করেছেন।
গতকাল সিনেট হলে ঘটে যাওয়া বিষয়ের জেরেই পদত্যাগ করেছেন কি না, এমন প্রশ্নে অধ্যাপক নিগার সুলতানা বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছি। গতকালই পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু ছুটির দিন থাকায় ওনারা (প্রশাসন) আজকে পেয়েছেন।’