Thank you for trying Sticky AMP!!

‘আইজ আমি এই কম্বল গায় দিয়া গুমামু’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর চরে ২০০ পরিবারের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে

মেঘনা নদীতে জেগে ওঠা চর মদনপুর। এ চরে অবস্থিত মদনপুর আলোর পাঠশালায় এবার ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে ফাবিয়া আক্তার। তার বাড়ি বিদ্যালয় থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে চরমুন্সি গ্রামে। প্রতিদিন ফাবিয়া খাল–বিল ভেঙে, সাঁকো পেরিয়ে পাঠশালায় আসে। বছরের প্রথম দিনে সে পেয়েছে নতুন বই। আর আজ বৃহস্পতিবার সকালে পেল নতুন কম্বল। আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আক্তার হোসেন তাঁর গায়ে একটি কম্বল জড়িয়ে দিতেই ফাবিয়া তাঁর বাবাকে বলে, ‘এইডা আমার কম্বল। আইজ আমি এই কম্বল গায় দিয়া গুমামু।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে ২০০ পরিবারের মধ্যে আজ সকাল ১০টার দিকে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত মদনপুর আলোর পাঠশালা প্রাঙ্গণে আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীদের পরিবার ও বিদ্যালয়ের আশপাশের অসহায় প্রবীণদের পরিবারের মধ্যে এ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি। শীতার্ত মানুষের জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টে প্রতিষ্ঠানটি ৫০০ কম্বল দিয়েছে। এসব কম্বল অসহায় শীতার্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

Also Read: ‘নরম তুলতুইলা কম্মল পাইনু, তুমরা হামরাকে মেলাই ভালোবাসিছো’

ইউনিয়নের চরপদ্মা গ্রামের নবতিপর বৃদ্ধ জালাল আহমেদ ওরফে জালুমাঝি কম্বল নিতে এসেছিলেন। বয়সের ভারে ঠিকমতো চলতে-ফিরতে পারেন না তিনি। তাঁর গায়ে একটি কম্বল জড়িয়ে দেন মদনপুর আলোর পাঠশালার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও ইউপি সদস্য ফারুক দৌলত। জালাল আহমেদ কম্বলটি পেয়ে হাসিমুখে দোয়া করেন।

কম্বল পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সনিয়া আক্তার, জাহিদুল ইসলাম, তানিয়া আক্তার; সপ্তম শ্রেণির নিরুতাজ, ফারজানা আক্তার, শিমু আক্তার; অষ্টম শ্রেণির ফাহিমা, শামিম; নবম শ্রেণির নুরনবী, মো. ইব্রাহীম, শারমিন; দশম শ্রেণির বিবি জয়নব, রূপা; এসএসসি পরীক্ষার্থী শিরিনা আক্তার, বিউটি, আসমা বেগমসহ অনেকে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বলেন, মদনপুর একটি দুর্গম চরাঞ্চল। এখানে রাস্তাঘাট নেই। চারপাশে নদী। শিক্ষার্থীরা কষ্ট সয়ে খালবিল ভেঙে বিদ্যালয়ে আসে। শিক্ষকেরা বিনা মূল্যে পড়ানোর পাশাপাশি প্রতিবছর প্রথম আলো ট্রাস্ট থেকে আসা শীতবস্ত্র দিয়ে সবার মুখে হাসি ফোটান।

Also Read: ‘এল্যা ঠান্ডা জার একনা কম নাগবে’

প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল নিয়ে এই প্রবীণ হাসিমুখে দোয়া করেন। বৃহস্পতিবার সকালে ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর চরে

কম্বল পেয়ে অভিভাবক জোসনা বেগম বলেন, ‘চরের মাইধ্যে গাছগাছালি কম। উত্তরালি বাতাসে খাতায় (কাঁথায়) শীত মানে না। নরম তুলতুইলা রঙিন এই কম্বলে যদি এট্টু আরাম অয়।’

কম্বল বিতরণের সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন, মদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কালিমুল্যাহ, আলোর পাঠশালার সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আল আমিন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, প্রথম আলোর ভোলা প্রতিনিধি নেয়ামতউল্যাহ, ভোলা বন্ধুসভার সভাপতি মো. আশরাফুল, সাধারণ সম্পাদক মো. সুমন, পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক নাইমুর রহমান প্রমুখ।

Also Read: ‘মোর অসুস্থ লোকটার গাওত ঢাকা দিবা পারিম’

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।

অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।