Thank you for trying Sticky AMP!!

লুৎফুল হাবীব

অবশেষে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেন আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফুল হাবীব

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠার পর নাটোরে সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফুল হাবীব। আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলার তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিনহাজুল ইসলাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেন।

লুৎফুল হাবীব সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদের শ্যালক। তিনি সিংড়ার শেরকোল ইউপির চেয়ারম্যান ছিলেন। ৩ এপ্রিল পদত্যাগ করে তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বেলা দুইটার দিকে মিনহাজুল ইসলাম তাঁর (লুৎফুল হাবীব) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দরখাস্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে জমা দেন। এতে বলা হয়েছে, ‘ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আমার জমাকৃত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের মনোনয়নপত্রটি প্রত্যাহারপূর্বক আমাকে উক্ত নির্বাচন হতে সরে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিতে মর্জি হয়।’

এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল লতিফ বলেন, ‘কাল সোমবার বিকেল চারটার মধ্যে যে কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে পারবেন। লুৎফুল হাবীবের দরখাস্ত নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হবে। অপর প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করেন, তাহলে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।’

Also Read: অভিযুক্ত প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ আওয়ামী লীগের

এর আগে আজ বেলা ১১টার দিকে নাটোরের কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর কাছে একটি ভিডিও পাঠান লুৎফুল হাবীব। এতে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন। লুৎফুল হাবীব ওই ভিডিওতে বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ৩ এপ্রিল ওই পদ থেকে পদত্যাগ করি। মনোনয়নপত্র দাখিল করার পর থেকে এলাকায় অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা থেকে আমি বুঝতে পারছি, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। একটি মহল এ ষড়যন্ত্রে সক্রিয় হয়েছে।’ তিনি জানান, এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এর আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছেন।

Also Read: আমি দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী, জড়িতরা কেউ ছাড় পাবে না: প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ

গত সোমবার বিকেলে নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের ভেতর থেকে দুর্বৃত্তরা সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে মারধর করতে করতে একটি কালো মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এর পাঁচ ঘণ্টা আগে তাঁর ভাইসহ এক আওয়ামী লীগ নেতাকে একই এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে বিকেল পাঁচটার কিছু পরে দুর্বৃত্তরা মুমূর্ষু অবস্থায় প্রার্থী দেলোয়ারকে গ্রামের বাড়ির (সিংড়ার কলম ইউনিয়নের পারসাঐল গ্রাম) সামনে ফেলে রেখে যায়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ওই দিন রাতে দেলোয়ার হোসেনের ভাই মুজিবর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন। এ পর্যন্ত পুলিশ দুই দফায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পরের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার হওয়া সুমন আহমেদ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি প্রতিপক্ষ প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের পক্ষ নিয়ে দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণের কথা স্বীকার করেন।

Also Read: নাটোরে অপহরণের ঘটনায় লুৎফুল হাবীবকে তলব করেছে ইসি

অপহরণের ওই ঘটনায় লুৎফুল হাবীবকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিল উপজেলা আওয়ামী লীগ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে অপহরণের ঘটনায় জড়িত দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।