পারমাণবিক জাহাজে উত্তর মেরু অভিযানের চুড়ান্ত বিজয়ী দল। রাশিয়া, বাংলাদেশ ও ভারতসহ ২০টি দেশের স্কুলশিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এ অভিযানের জন্য নির্বাচিত হয়েছে
পারমাণবিক জাহাজে উত্তর মেরু অভিযানের চুড়ান্ত বিজয়ী দল। রাশিয়া, বাংলাদেশ ও ভারতসহ ২০টি দেশের স্কুলশিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এ অভিযানের জন্য নির্বাচিত হয়েছে

পারমাণবিক জাহাজে উত্তর মেরু অভিযানে যাচ্ছে বাংলাদেশি কিশোর

বাংলাদেশ থেকে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ নামের এক স্কুলশিক্ষার্থী পারমাণবিক জাহাজে উত্তর মেরু অভিযানে যাচ্ছে। আগামী আগস্টে রাশিয়ার পরমাণুশক্তি-চালিত আইসব্রেকারে (বরফে ঢাকা পানিপথে চলার জন্য বিশেষ ধরনের জাহাজ) রোমাঞ্চকর এ অভিযান হবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাশিয়ার পরমাণু সংস্থা রোসাটম একটি বেসরকারি বার্তা সংস্থার মাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে ওই স্কুলছাত্রের বিস্তারিত পরিচয় জানানো হয়নি।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে রোসাটম। এর আগে রোসাটম এক বিজ্ঞপ্তিতে অভিযানে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছর ‘আইসব্রেকার অব নলেজ’ প্রতিযোগিতায় রাশিয়া, বাংলাদেশ, বেলারুশ, বলিভিয়া, ব্রাজিল, হাঙ্গেরি, ভিয়েতনাম, ভারতসহ ২০টি দেশের ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করে। রোসাটমের সহায়তায় প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করেছে রাশিয়ার পারমাণবিকশিল্প তথ্যকেন্দ্র নেটওয়ার্ক। এবারের নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড ১৫৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ এ অনন্য সুযোগ পেয়েছে। অভিযানে বিদেশি শিক্ষার্থী ছাড়াও রাশিয়ার উন্মুক্ত ও আন্তর্জাতিক নির্বাচনপ্রক্রিয়া এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী আরও ৪৫ জন অংশ নেবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রতিযোগিতাটি অনলাইনে তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতাটি শুরু হয় গত ২৮ এপ্রিল। প্রথম ধাপে বিদেশি শিক্ষার্থীরা একটি বিজ্ঞানসংক্রান্ত কুইজে অংশ নেয়। দ্বিতীয় ধাপে তাদের অনেক ওয়েবিনারে অংশ নিতে হয়, যার মূল বিষয়বস্তু ছিল রোসাটমের যুগান্তকারী প্রযুক্তি ও উত্তর মেরু অভিযানে ব্যবহৃত জাহাজের প্রযুক্তি। এসব ওয়েবিনারের ভিত্তিতে আরেকটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। চূড়ান্ত পর্বে তাদের একটি ভিডিও প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে বলা হয়, যার মূল বিষয় ছিল কীভাবে নিজের দেশের জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নে পরমাণুপ্রযুক্তি ব্যবহৃত হতে পারে। একটি আন্তর্জাতিক বিচারক প্যানেল প্রেজেন্টেশনগুলো মূল্যায়ন করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে।

সম্প্রতি মস্কোতে আয়োজিত ‘আইসব্রেকার অব নলেজ’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও শিক্ষা প্রকল্পের অধীনে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ২০ জন বিদেশি শিক্ষার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। এটি ছিল প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসর, যা রাশিয়ার পরমাণুশিল্পের ৮০ বছর এবং উত্তর সমুদ্রপথ আবিষ্কারের ৫০০ বছর পূর্তি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন ডিসিপ্লিন ও পরমাণু প্রযুক্তির প্রচার ছাড়াও প্রকল্পটির অন্য একটি লক্ষ্য হলো প্রতিভাবান শিশুদের খুঁজে বের করা। তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা ও ক্যারিয়ার তৈরিতে সহায়তা দেওয়া। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ীরা আইসব্রেকারে (পারমাণবিক জাহাজ) করে উত্তর মেরু অভিযানে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। গত ৬ বছরে বিভিন্ন দেশের ৩৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী এ অভিযানে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে একমাত্র রাশিয়ারই একটি নিজস্ব পরমাণুশক্তি–চালিত আইসব্রেকারের বহর আছে। বহরে পরমাণু আইসব্রেকার আছে মোট আটটি।