পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা বাজারে ডাকাতি। গতকাল বুধবার গভীর রাতে
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা বাজারে ডাকাতি। গতকাল বুধবার গভীর রাতে

পাবনায় আবার স্পিডবোটে এসে নদীসংলগ্ন স্বর্ণের দোকান, ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি

পাবনায় আবার স্পিডবোটে এসে নদীসংলগ্ন বাজার ও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার গভীর রাতে ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, ডাকাত দল বাজারের পাঁচটি সোনার দোকান ও এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে অন্তত ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার এবং প্রায় এক কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। ঘটনার পর থেকে তাঁরা আতঙ্কে আছেন।

এর আগে গত ২৪ নভেম্বর পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনাপাড়ের নাকালিয়া বাজারে একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এদিন ডাকাত দল বাজারের ৪টি দোকান থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

অষ্টমনিষা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, রাত পৌনে দুইটার দিকে ১০–১৫ জনের একটি ডাকাত দল গুমানী নদী দিয়ে স্পিডবোটে এসে বাজারে ঢুকে পড়ে। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল। কারও কারও হাতে দোকানের তালা কাটার যন্ত্র দেখা গেছে। তারা এসে প্রথমেই বাজারের দুই নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। এরপর দোকানের তালা ভেঙে পাঁচটি সোনার দোকান লুট করে। পরে বাজারের পার্শ্ববর্তী এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি করে। ডাকাত দল ওই বাড়ির লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর ও লুটপাট চালায়। পরে আরেক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করলে ব্যর্থ হয়ে ভোর চারটার দিকে স্পিডবোট নিয়ে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়দের দাবি, ডাকাতদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র ছিল। কিছুতেই তাদের প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল না। আতঙ্কে কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলেন না।

তপন জুয়েলার্সের মালিক তপন কর্মকার বলেন, ‘আমার দোকানে বেশ কয়েক লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিল। কত ভরি সোনা ছিল, তা–ও বলতে পারতেছিনে। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’

রতন জুয়েলার্সের মালিক রতন কর্মকারের দাবি, তাঁর দোকান থেকে ডাকাতেরা সোনা ও পাঁচ লাখ টাকা এবং তাঁর বাড়ি থেকে ১০ ভরি সোনা ও ১৫ লাখ টাকা লুট করে। এ ছাড়া মধু জুয়েলার্স, মা জুয়েলার্স ও আঁখি জুয়েলার্স থেকেও বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করা হয়।

রতন কর্মকার জানান, ডাকাতেরা দোকানে লুটপাট শেষে তাঁর বাড়িতে হানা দেয়। এরপর দরজা ভেঙে অস্ত্রের মুখে তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে জিম্মি করে মারধর শুরু করে। তিনি তিনতলায় গিয়ে লুকিয়ে কয়েকজন প্রতিবেশীকে ফোন দেন। কিন্তু অস্ত্রের ভয়ে কেউ আসেন না। এর মধ্যেই ডাকাতেরা তাঁর বাড়িতে লুটপাট চালায়।

ব্যবসায়ী দীপক কর্মকার জানান, ডাকাতেরা তাঁর বাড়িতেও ডাকাতির চেষ্টা করে। তবে ভেতরে কোনোভাবেই ঢুকতে না পেরে পরে চলে যায়।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তার আগেই ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পর জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টির তদন্তে থানা–পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কাজ শুরু করেছে। দ্রুত ডাকাত দলকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।