সুনামগঞ্জে শিক্ষার্থীদের হাতে মেধা যাচাই পরীক্ষার পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। আজ রোববার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসন রাজা মিলনায়তনে
সুনামগঞ্জে শিক্ষার্থীদের হাতে মেধা যাচাই পরীক্ষার পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। আজ রোববার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসন রাজা মিলনায়তনে

কাজের ধারাবাহিকতা থাকলে ৫ বছর পর প্রাথমিক শিক্ষার চিত্র পাল্টে যাবে: বিধান রঞ্জন রায়

শিক্ষা নিয়ে কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আগামী পাঁচ বছর পর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর চেহারা পাল্টে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষা নিয়ে তাড়াহুড়া করে কাজ করা যায় না। আমরা সমস্যা চিহ্নিত করেছি, কাজ শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে যাঁরা আসবেন, তাঁরা যদি ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন, তাহলে প্রাথমিক শিক্ষার চিত্র পাল্টে যাবে।’

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘মেধা যাচাই পরীক্ষা-২০২৫’-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসন রাজা মিলনায়তনে রোববার দুপুরে এই অনুষ্ঠান হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। সুনামগঞ্জে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে গত ২৯ অক্টোবর এই পরীক্ষা হয়। এতে জেলার ১২টি উপজেলার ১ হাজার ৪৭৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির ৫৯ হাজার শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নেয়। রোববার ৫ম শ্রেণির ৫৭ জন, ৪র্থ শ্রেণির ৪৮ জন শিক্ষার্থী, ২০ জন শিক্ষক এবং ২১টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, ‘একসময় যাঁরা শিক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়ন করতেন, তাঁদের বলে দেওয়া হতো নম্বর বেশি দেওয়ার জন্য বা এত নম্বরের নিচে দেওয়া যাবে না। যে কারণে জিপিএ-৫ বেশি পেত শিক্ষার্থীরা। পরে দেখা যেত এই সব শিক্ষার্থী ইংরেজি পড়তে পারে না, অঙ্ক জানে না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না। তাদের ৯৪ ভাগ শিক্ষার্থী ফেল করে।’

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পাবে জানিয়ে উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, বই ছাপা হচ্ছে, গুদামে আসতে শুরু করেছে। এতে নির্বাচনের কোনো প্রভাব পড়বে না। সব শিক্ষার্থী সময়মতো বই পাবে। প্রাথমিকে শিক্ষকের ঘাটতির বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে, শিগগির বিজ্ঞাপন দেখবেন। শিক্ষক নিয়োগ হবে উপজেলার ভিত্তিতে। উপজেলায় যেসব খালি পদ আছে, সেগুলোতে নিয়োগ দেওয়া হবে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের শুধু বইয়ের পড়াশোনা করালে চলবে না, তাদের নৈতিক শিক্ষাও দিতে হবে। তাদের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে হবে। আমাদের আগামী প্রজন্মকে মেধাবী, মানবতাবাদী হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষক-অভিভাবক সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক এ কে মোহাম্মদ সামছুল আহসান, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তোফায়েল আহাম্মেদ, সিলেট প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক মো. নুরুল ইসলাম প্রমুখ। এর আগে সকালে উপদেষ্টা সুনামগঞ্জ প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে শিক্ষার মানোন্নয়নে অংশীজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।