জামালপুরে যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানি ১৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। নদীতীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের মধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

যমুনাতীরবর্তী বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার থেকে যমুনার পানি বাড়তে শুরু করে। গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে বিভিন্ন খাল, বিল ও যমুনার ছোট ছোট শাখা প্লাবিত হয়। এতে পানি লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। পানি বাড়ায় ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী, কুলকান্দি, বেলগাছা, নোয়ারপাড়া ও সাপধরী ইউনিয়ন; দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী, বাহাদুরাবাদ ও চিকাজানী ইউনিয়ন; মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া, নাংলা, আদ্রা ও কুলিয়া ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এবং দুর্গম চরাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রামের ফসলি মাঠ তলিয়ে গেছে। পানি গ্রামের কিছু কিছু বাসিন্দার আঙিনায় যেতে শুরু করেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পানিবন্দী হয়ে পড়ার শঙ্কা করছেন তাঁরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জামালপুর কার্যালয়ের পানি পরিমাপক আবদুল মান্নান আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরেই যমুনার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তবে গতকাল রাত থেকে পানি খুব দ্রুত বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীতীরের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। আগামী দুই দিন আরও কিছুটা পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে নদীতীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে। তবে বড় ধরনের কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই বলে তিনি জানান।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মুক্তাদীর আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, খালগুলো প্লাবিত হয়ে পানি লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করেছে। তবে এখনো বাড়িঘরের মধ্যে পানি আসেনি। আর কয়েক সেন্টিমিটার পানি বাড়লে লোকজন পানিবন্দী হয়ে পড়বেন। কারণ যমুনার একদম তীরবর্তী ইউনিয়ন চুকাইবাড়ী। যেভাবে পানি বাড়ছে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেখানকার বাসিন্দাদের পানিবন্দী হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, যমুনার একদম তীরবর্তী ইউনিয়ন চিনাডুলী। যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠলেই সবার আগে এই ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়। ইতিমধ্যে বলিয়াদহ, পশ্চিম বাবনা, হাড়গিলাসহ কয়েকটি গ্রামের ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। আর কয়েক সেন্টিমিটার পানি বাড়লে বাসিন্দারা পানিবন্দী হয়ে পড়বেন।