
মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ ওরফে আবু আম্মার জুনুনীকে আজ সোমবার দুপুরে বান্দরবানের আদালতে হাজির করা হয়েছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী হত্যা মামলার আসামি তিনি। এ ছাড়া অস্ত্র আইনেও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এ দুই মামলায় তাঁকে বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং চিফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করা হয়। উভয় আদালত থেকে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
সরকারি কৌঁসুলি আলমগীর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৭ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আরসার ৯ সদস্যসহ গ্রেপ্তার হন আতাউল্লাহ। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইন ও বিদেশি আইনে মামলা করা হয়েছিল। এ ছাড়া নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর মাদকবিরোধী অভিযানে ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা রিজওয়ান রুশদী হত্যা ও অস্ত্র আইনের মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাঁকে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টায় প্রথমে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ডিজিএফআই কর্মকর্তা রিজওয়ান রুশদী হত্যা মামলায় আতাউল্লাহকে হাজির করা হয়। একই মামলায় আগে গ্রেপ্তার আরও নয়জনকেও হাজির করা হয়েছিল। আদালত আগের গ্রেপ্তার নয়জনের সঙ্গে আতাউল্লাহকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর অস্ত্র আইনে করা মামলায় আতাউল্লাহকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত শুনানি শেষে আতাউল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ রেজাউল করিম মজুমদার জানিয়েছেন, স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এ জন্য ওই মামলায় আতাউল্লাহকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়েছিল। অস্ত্র মামলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। উভয় আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী হত্যার ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর ডিজিএফআই কক্সবাজার কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় বলা হয়েছে, ১৪ নভেম্বর ঘুমধুমে অভিযান পরিচালনার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আরসার প্রধান আতাউল্লাহর নির্দেশে গুলি চালানো হয়। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ৪৫ মিনিট গোলাগুলি হয়। আরসার গুলিতে ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী নিহত ও নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য আহত হন।
পুলিশ জানায়, আরসার প্রধান আতাউল্লাহ দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। তিনি গত নভেম্বরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আবাসিক এলাকায় ১০ তলা একটি ভবনে মাছ ব্যবসায়ী পরিচয়ে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন। সেখান থেকে আরও ১০ সদস্যসহ তাঁকে গত ১৭ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁর কাছ থেকে ২১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল।