
ফেনীর সোনাগাজীতে অটোরিকশার এক চালককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করার পর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ, ওই চালক গতকাল রোববার সকালে তাঁর প্রতিবেশী এক দম্পতির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও গোপনে ধারণ করছিলেন। এ ঘটনার জেরে এদিন রাতে তাঁর ওপর হামলা হয়। আজ সোমবার ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ সুজন (২৬)। তিনি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরসাহাভিকারী গ্রামের মো. মোস্তফার ছেলে। পেশায় সুজন অটোরিকশাচালক। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নিহত সুজনের প্রতিবেশী মামুন হোসেন (২৯), মামুনের স্ত্রী আসমা আক্তার (২০), সোনাগাজী উপজেলার কামাল উদ্দিনের স্ত্রী লিপি আক্তার (৪০) ও একই এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে জামসের আলম (৪৫)।
নিহত যুবকের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অটোরিকশাচালক সুজন তাঁর স্ত্রী ও চার বছরের মেয়েকে নিয়ে সোনাগাজীর একটি বাজারসংলগ্ন এক বাসায় ভাড়া থাকতেন। ওই বাসার পাশের কক্ষে থাকতেন মামুন ও তাঁর স্ত্রী আসমা আক্তার। গতকাল সকালে মামুনের স্ত্রী আসমা আক্তারের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের একটি ভিডিও সুজন তাঁর মুঠোফোনে ধারণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। রাতে মামুন বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে সুজনের ওপর হামলা চালান। সুজনকে প্রথমে বেধড়ক পিটিয়ে ও পরে ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন মামুন।
খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন সুজনকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে ফেনী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের জন্য সুজনের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত সুজনের ভাতিজা তারেক খান বলেন, গোপনে ভিডিও ধারণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামুন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে সুজনকে হত্যা করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা উচিত।
সোনাগাজী মডেল থানা–পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করেছে এবং হত্যায় ব্যবহৃত বঁটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান।