প্রবল ঢেউয়ে ভেঙে পড়া সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট অ্যাপ্রোচ সড়ক
প্রবল ঢেউয়ে ভেঙে পড়া সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট অ্যাপ্রোচ সড়ক

নির্মাণের দুই মাসেই কেন সীতাকুণ্ডের ফেরিঘাট সড়কের এই হাল

নির্মাণের মাত্র দুই মাসের মাথায় ঢেউয়ের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাটের অ্যাপ্রোচ সড়কের একাংশ। ৭০০ মিটার দীর্ঘ এই সড়কের প্রায় ১০০ মিটারই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কটি এখন যান চলাচলের অনুপযোগী।

বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের প্রভাবে তিন দিন ধরেই সাগর উত্তাল। বড় বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে সড়কে। ঢেউয়ের ধাক্কায় ৭০০ মিটার সড়কের সাগরের দিকের বেশির ভাগ অংশ জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে। ঢেউয়ের প্রবল আঘাতে সড়কটির পশ্চিমাংশের ইট খুলে পড়েছে। সরে গেছে বিভিন্ন স্থানে ব্লক। জোয়ারের প্রচণ্ড ঢেউয়ে ডুবে গেছে ঘাটের ২ নম্বর পন্টুন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, সাগরের নিম্নচাপ সৃষ্টির পর তিন দিন ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন সড়কের উপরিতল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেটি সংস্কার করা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।

গত ২৪ মার্চ সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার দুই বিশেষ সহকারীকে সঙ্গে নিয়ে  বাঁশবাড়িয়া-গুপ্তছড়া ফেরিঘাটের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। এর আগে ফেরিঘাটের অ্যাপ্রোচ সড়কটি নির্মাণ করে সেনাবাহিনীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উদ্বোধনের দুই মাসের মাথায় নিম্নচাপের কারণে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হলো।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফেরিঘাটের অ্যাপ্রোচ সড়কের এক মাথায় দুটি পন্টুন দিয়ে দুটি ঘাট তৈরি করা হয়েছে। ফেরিঘাট দুটির নাম দেওয়া হয়েছে ফেরিঘাট-১ ও ফেরিঘাট-২। ১ নম্বর ঘাট থেকে ২ নম্বর ঘাটমুখী সড়কের ব্লক সরে গেছে। উপরিতলের ইট সরে গিয়ে মাটি ধুয়ে গেছে। অ্যাপ্রোচ সড়কের মোট ১০০ মিটারের বেশি সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জিও ব্যাগ দৃশ্যমান হয়েছে। সড়কটির উপরিতলে ইট এমনভাবে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে, গাড়ি চলাচলের কোনো সুযোগ নেই।

সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা সড়কটি দেখতে যান। দুদিন আগে সেখানে পর্যটক ও সন্দ্বীপের মানুষের আনাগোনা ছিল। সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেকেই ছবি ও ভিডিও তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।

বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, প্রবল জোয়ারে তাদের একটি পন্টুন ডুবে গেছে। সেটি উদ্ধারের কাজ শুরু করেছেন। এ ছাড়া অ্যাপ্রোচ সড়কটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি এখন গাড়ি চলাচলে উপযোগী নয়। সড়কের উপরিতলের ইট সরে গিয়ে কিছু অংশের মাটি ধুয়ে গেছে। ১ নম্বর ঘাটের পশ্চিম পাশের ব্লক সরে গেছে। সড়কটি সংস্কার করার পর ফেরি চলাচল শুরু হবে বলে জানান।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি গত শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিদর্শন করেছেন। সড়কটি নির্মাণ করেছে সেনাবাহিনীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও সড়কটি পরিদর্শন করেছেন। বর্ষায় প্রবল ঢেউয়ের হাত থেকে কীভাবে সড়কটি টেকানো যায়, সে পরিকল্পনা করছেন। বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সড়কটি দ্রুত সংস্কার করবেন বলে জানান তিনি।