বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

সিন্ডিকেটের বৈঠক হয়নি, হল ও শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নোটিশ বলবৎ

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক সোনিয়া সেহেলী। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক বিভাগের কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার সিন্ডিকেটের সভা হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। শিক্ষকেরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা সহযোগিতা করছেন না বলে সভা হয়নি। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তাঁরা কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের সভা না হওয়ার কারণে হল বন্ধের নোটিশও তুলে নেয়নি প্রশাসন।

এ ছাড়া গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাড়ে চার ঘণ্টা আলোচনার পর যে সিদ্ধান্তগুলো এসেছিল, তার কিছুই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. শহীদুল হক। আজ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক সোনিয়া সেহেলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমাকে বলেছিলেন সিন্ডিকেট মিটিংয়ের পূর্বশর্ত হলো, গতকাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় যে সিদ্ধান্তগুলো এসেছে, সেটির একটি যৌথ (শিক্ষক ও শিক্ষার্থী) লিখিত নথি দিতে হবে। সেটির জন্যই আজ বিকেল সাড়ে চারটায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বারবার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছে। তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে আজ শুধু গতকাল হওয়া সিদ্ধান্তগুলোর একটি লিখিত নথি তৈরি করা হবে এবং সেখানে তাঁদের স্বাক্ষর নিয়ে সম্মতির বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। এই নথি উপাচার্যকে দিলেই তিনি সিন্ডিকেট মিটিং শুরু করবেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের সহযোগিতা করছেন না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীরা কেবল কালক্ষেপণ করেছেন। এক ঘণ্টা ধরে তাঁদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার পরও তাঁরা আসেননি। এই পরিস্থিতিতে উপাচার্যের কাছে যৌথ বিবৃতি দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন যদি শিক্ষার্থীরা কোনো কর্মসূচিতে যান এবং ভাঙচুর বা এ রকম কিছু করেন সে ক্ষেত্রে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন তদারকি করবে। বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু বন্ধ তাই স্থানীয় প্রশাসন আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি দেখবেন।

শিক্ষকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা হয় আন্দোলন ও গতকালের আলোচনায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী এহসানুল হকের (হিমেল) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গতকাল আমরা ৬১ জন শিক্ষার্থী শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এরপরও আজকে তাঁরা আমাদের মাত্র পাঁচজনকে যৌথ বিবৃতির জন্য যেতে বলেছেন। গতকালের আলোচনায় আমাদের দাবি ও সিদ্ধান্ত সবই আমরা উল্লেখ করেছি এবং আমাদের স্বাক্ষরও দিয়েছি। এত কিছুর পরেও কেন আবার পাঁচজনকে লিখিত দিতে হবে, এটাই বোধগম্য নয়।’

এহসানুল হক বলেন, গতকালের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল আজ দুপুর ১২টার মধ্যে উপাচার্য হল বন্ধের নোটিশ প্রত্যাহার করবেন। পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের প্রশাসনিক এবং শিক্ষাগত কোনো হয়রানি করা হবে না, এই মর্মে তিনি লিখিত নথি প্রকাশ করবেন। কিন্তু এর কিছুই হয়নি। শিক্ষকেরা কোনো রকম সহযোগিতা করছেন না।

পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থীদের ওই প্রতিনিধি বলেন, ‘আমাদের একক ডিগ্রির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত এখনো পাইনি। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি কী হবে, সেটা নিয়ে অনুষদের সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’