রাঙামাটিতে সম্প্রীতি সম্বেশে বক্তব্য দেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন
রাঙামাটিতে সম্প্রীতি সম্বেশে বক্তব্য দেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন

‘সেফ এক্সিট নয়, দেশেই থাকব’, রাঙামাটিতে ধর্ম উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা সেফ এক্সিট (নিরাপদ প্রস্থান) চাই না। স্বাভাবিক এক্সিট নিয়েই নির্বাচন–পরবর্তী সময়ে এই দেশেই থাকব।’

আজ শনিবার দুপুরে রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ওলামা পরিষদ আয়োজিত ‘সম্প্রীতি সমাবেশ’ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে আমরা চলে যাব। সেফ এক্সিট বলতে আমি কিছু বুঝি না। আমার কোনো সেকেন্ড হোম নেই, এমনকি ঢাকাতেও নিজের বাড়ি নেই। বর্তমানে আমি সরকারি বাড়িতে এবং চট্টগ্রামে ভাড়া বাসায় থাকি। আমি এই দেশের মানুষ। এই দেশ আমার, এখানেই আমি থাকব।’

সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) কথা ভাবতেছে।’ তাঁর এ বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলে।

সম্প্রীতি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ওলামা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাওলানা হাজী শরীয়ত উল্লাহ এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাদেক হোসেন, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, জেলা পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, বিহারসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতারা।

এদিকে রাঙামাটি শহরের রাঙাপানি মিলন বিহারে ৫১তম কঠিন চীবর দান ও প্রথম সম্মিলিত জাতীয় কঠিন চীবর দান আজ বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘এ দেশ আমাদের সবার। যার মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার মনোভাব রয়েছে, সে কখনো মানুষ হতে পারে না। বাংলাদেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সম্প্রীতির দেশ। আজকের কঠিন চীবর দান এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘এই অঞ্চলে শান্তি চাই, এই অঞ্চলে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক চাই, উন্নয়ন চাই। শান্তি, সৌহার্দ্য, উন্নয়ন, সম্প্রীতি বলুন, তার জন্য দরকার নীতি ও নৈতিক আদর্শ। যে নীতি ও নৈতিকতার কথা প্রতিটি ধর্মে আমাদের শেখায়, শেখাচ্ছে।’

রাঙামাটি বিএম ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আনন্দ জ্যোতি চাকমার সঞ্চালনায় রাঙামাটি শহরের সংঘারাম বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ ও সিএইচটি সুপ্রিম কাউন্সিলের সভাপতি শ্রদ্ধা লংকার মহাথেরোর সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমতল এলাকা থেকে সাড়ে তিন শ আমন্ত্রিত বৌদ্ধ ভিক্ষুরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সদস্যসচিব সুকোমল বড়ুয়া, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, রাঙামাটি পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।