কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের মারধরে এক নারী নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে গুরুতর আহত হয়েছেন ওই নারীর ছেলে। আজ সোমবার বিকেলে উপজেলার গোবরিয়া আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নারীর নাম মমতাজ বেগম (৬১)। তিনি লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের স্ত্রী। আহত তাঁদের ছেলের নাম জিল্লুর রহমান (৪০)। জিল্লুরকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মমতাজ বেগমের সঙ্গে তাঁর প্রতিবেশী কালো মিয়া পরিবারের জমিসংক্রান্ত পূর্ববিরোধ রয়েছে। সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে মমতাজ বেগমের ছেলে জিল্লুর বাড়ির কাছের একটি গাছ থেকে আম পাড়তে যান। এ সময় কালো মিয়ার ছেলে তানভির মিয়া বাধা দেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কালো মিয়া পরিবারের লোকজন এসে জিল্লুরকে লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করেন। চিৎকার শুনে সেখানে জিল্লুরের মা মমতাজ বেগম আসেন। ছেলেকে মারতে দেখে তিনি বাধা দেন। তখন প্রতিপক্ষের লোকজন মমতাজ বেগমের ওপর চড়াও হন। মা-ছেলে দুজনকেই মেরে রক্তাক্ত জখম করা হয়। প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে মা-ছেলেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বাজিতপুর উপজেলার বেসরকারি জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই মমতাজ বেগম মারা গেছেন।
মমতাজ বেগমের স্বজনদের দাবি, আমগাছটি অনেক পুরোনো, অন্তত ত্রিশ বছর হবে। শুরু থেকে ওই গাছের আম পাড়েন মমতাজ বেগমের পরিবারের লোকজন। এবার কালো মিয়ার পরিবারের লোকজন আম পাড়তে দিচ্ছিলেন না। আজ আম পাড়তে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রথমে জিল্লুরকে, পরে মমতাজকে মারধর করেন।
কালো মিয়ার পরিবারের সদস্যদের দাবি, গাছটি মূলত কালো মিয়ার পরিবারের জায়গায় জন্মেছে। জোর করে এত দিন মমতাজ বেগমের পরিবারের লোকজন আম পেড়ে নিতেন। এবার আগে থেকে আম না পাড়ার জন্য বলা ছিল। তারপরও আজ মমতাজ বেগমের ছেলে আম পাড়তে যান। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, আম পাড়াকে কেন্দ্র করে মারামারিতে মমতাজ বেগম নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। তবে অভিযুক্ত কাউকে আটক করা যায়নি। এ ঘটনায় অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে।