সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া নদীতে পানি খেতে এসে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে বিলুপ্তপ্রায় এই বনছাগল। পরে এটিকে বনে অবমুক্ত করা হয়। শনিবার দুপুরে
সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া নদীতে পানি খেতে এসে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে বিলুপ্তপ্রায় এই বনছাগল। পরে এটিকে বনে অবমুক্ত করা হয়। শনিবার দুপুরে

সিলেটে গ্রামের নদীতে পানি খেতে এসে ধরা পড়ল বিলুপ্তপ্রায় বনছাগল, পরে বনে অবমুক্ত

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় লোভাছড়া নদীতে পানি খেতে নামে অপরিচিত একটি প্রাণী। গ্রামের কয়েকজনের নজরে এলে তাঁরা প্রাণীটিকে ধরতে ধাওয়া দেন। প্রাণীটি কিছুটা দূরে আসামপাড়া নিহালপুর গ্রামের পাশে চলে গেলে স্থানীয় লোকজন প্রাণীটিকে ধরে ফেলেন। এরপর তাঁরা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের খবর দেন। কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাণীটিকে বিলুপ্তপ্রায় বনছাগল বলে নিশ্চিত করেন। পরে গ্রামবাসীর সহায়তায় বন বিভাগের কর্মকর্তারা প্রাণীটিকে লোভছড়া বনে অবমুক্ত করেন।

শনিবার সকাল সাতটার দিকে লোভাছড়া নদীতে বনছাগলটির দেখা মেলে। বেলা আড়াইটার দিকে বনে প্রাণীটিকে অবমুক্ত করা হয়। এ সময় গ্রামবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় লোভাছড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপক ইউসুফ ওসমান, বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মো. আলী আক্তারুল হক চৌধুরী, সহযোগী বিট কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, ফরেস্ট গার্ড হাবিবুর রহমান তালুকদার ও রতন মিয়া, বন পাহারাদার আবদুন নূর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

লোভাছড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপক ইউসুফ ওসমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রাণীটি পানি খেতে নদীতে নামলে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া দিয়ে ধরেন। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে বনছাগলটিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নিয়ে এসে লোভাছড়া বনে অবমুক্ত করেন।

যোগাযোগ করলে বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মো. আলী আক্তারুল হক চৌধুরী বলেন, প্রাণীটি বিলুপ্তপ্রায় একটি বনছাগল। একজন ভেটেরিনারি সার্জন দিয়ে প্রাণীটির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়। প্রাণীটি ঊরুতে কিছুটা আঘাত পেয়েছিল, এ জন্য চিকিৎসাও দেওয়া হয়। সুস্থ অবস্থাতেই প্রাণীটিকে লোভাছড়া চা-বাগানসংলগ্ন গহিন বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।

স্থানীয় মানুষ ও বন বিভাগের প্রচেষ্টায় বনছাগলটিকে বনে অবমুক্ত করার বিষয়টির প্রশংসা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এখন যেকোনো প্রাণী ধরেই পিটিয়ে মেরে ফেলার একটা অলিখিত রেওয়াজ দেখা যায়। কিন্তু এখানে প্রাণীর প্রতি বিরল ভালোবাসা দেখিয়েছেন মানুষজন। তাঁরা প্রাণীটিকে ধরে বন বিভাগে খবর দিয়েছেন। পরে সবাই মিলে প্রাণীটিকে বনে অবমুক্ত করেছেন, এটা প্রশংসনীয়।’

আবদুল করিম চৌধুরী আরও জানান, কয়েক দশক আগেও সিলেটের বনে প্রচুর পরিমাণে বনছাগলের দেখা মিলত। এখন আর চোখেই পড়ে না। সিলেট অঞ্চলে প্রাণীটি এখন একেবারেই বিলুপ্তপ্রায়।