
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় কোটাবৈষম্য ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে হরতাল পালন করছে তিনটি সংগঠন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৩৬ ঘণ্টার এ হরতাল শুরু হয়। আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন সংগঠন তিনটির নেতারা।
এর আগে গতকাল বুধবার বেলা তিনটায় কোটাবিরোধী ঐক্যজোট, সাধারণ শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ নামের তিনটি সংগঠন এ কর্মসূচি ঘোষণা করে। তিনটিই পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালিদের সংগঠন। আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এ কর্মসূচি ডাকা হয়েছে। হরতাল সমর্থনকারীরা এ পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি এ পরীক্ষায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা বাতিলের দাবি করছেন তাঁরা।
আজ সকাল সাড়ে আটটায় সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরের কলেজগেট, ভেদভেদি, তবলছড়ি, দোয়েল চত্বর, বনরূপা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষিপ্তভাবে পিকেটিং করছেন হরতাল সমর্থনকারীরা। শহরের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে শুরু করে দূরপাল্লার গাড়ি ও নদীপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এসব যান চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন অফিস–আদালতে কাজে যাওয়া মানুষ ও সাধারণ পথচারীরা।
হরতাল সমর্থনকারীদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, জরুরি সেবা, যেমন হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও ওষুধের দোকান তাঁদের কর্মসূচির আওতার বাইরে থাকবে। রাঙামাটি দোয়েল চত্বরে পিকেটিং করা শিক্ষার্থী রিয়াজুল দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা হরতালের আওতার বাইরে থাকবে।’
রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সদস্য নাজিম উদ্দীন বলেন, হরতালের কারণে নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে কোনো লঞ্চ ঘাট থেকে ছেড়ে যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার লঞ্চ চলাচল করবে।
জানতে চাইলে জেলার কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন বলেন, এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের ২৮টি বিভাগের প্রশাসনিক কাজ জেলা পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কার্যক্রমও রয়েছে। জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত এই বিভাগের অধীন রাঙামাটিতে সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষা হবে।
জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, ২০২২ সালে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ৪৬২টি শূন্য পদের বিপরীতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল জেলা পরিষদ। পরে চলতি বছরের ২৭ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় আবার এসব পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে এসব পদের বিপরীতে আবেদন করেন প্রায় সাত হাজার চাকরিপ্রত্যাশী।