আদালত
আদালত

বরগুনায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

বরগুনায় যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মহিমা বেগম নামের এক নারীকে হত্যার দায়ে তাঁর স্বামী, সতিন ও জামাতাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের কবির তালুকদার (৫৯), তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী এলাচী বেগম (৫০) ও জামাতা মো. সুজন (৩০)। আদালত তাঁদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় তিনজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কবির তালুকদার যৌতুকের দাবিতে তাঁর প্রথম স্ত্রী মহিমা বেগমকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। একপর্যায়ে মেয়ে রেখা বেগমের (২২) শাশুড়ি এলাচী বেগমের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন কবির তালুকদার। রেখা প্রতিবাদ করলে এলাচী বেগম ও রেখার স্বামী সুজন তাঁকে নির্যাতন করতে থাকেন। একপর্যায়ে রেখা আত্মহত্যা করেন। কয়েক বছর পর কবির তালুকদার এলাচী বেগমকে বিয়ে করেন। এর পর থেকে মহিমা বেগমের ওপর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর সকালে কবির তালুকদার ছেলে হেলাল তালুকদারকে বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে মহিমা বেগমকে যৌতুকের টাকা ও সম্পত্তি বিক্রির জন্য চাপ দিতে থাকেন। এতে রাজি না হওয়ায় কবির তালুকদার, এলাচী বেগম ও সুজন মিলে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে তাঁকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় হেলাল তালুকদার (২৭) ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর পাথরঘাটা থানায় মামলা করেন।

মামলার বাদী হেলাল তালুকদার বলেন, ‘রায়ে আমি সন্তুষ্ট। মায়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি হওয়ায় আমি আইনকে শ্রদ্ধা জানাই।’

মামলা পরিচালনাকারী রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি রঞ্জুআরা শিপু বলেন, সাক্ষ্য–প্রমাণে হত্যাকাণ্ড প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এই রায়ের মাধ্যমে সমাজে অপরাধ কমে আসবে।