Thank you for trying Sticky AMP!!

রাজশাহী সিটি নির্বাচন কতটা অংশগ্রহণমূলক, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সুজনের

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সুজনের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। শনিবার বেলা ১১টায় নগরের একটি রেস্তোরাঁয়

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২০১৮ সালের নির্বাচনের চেয়ে এবার উচ্চশিক্ষিত প্রার্থী ও ব্যবসায়ী প্রার্থীর হার বেড়েছে। গত নির্বাচনের চেয়ে এই নির্বাচনে প্রার্থীদের মামলার হার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।

নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এই তথ্য জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। আজ শনিবার রাজশাহীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার আরও জানান, নির্বাচনে চারজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে তিনজনের বার্ষিক আয় ৫ লাখ টাকার কম আর একজনের ৫ কোটি টাকার অধিক। তিনজন মেয়র প্রার্থীর আয়করের তথ্য পাওয়া গেছে। তার মধ্যে দুজন ৪ হাজার টাকা কর প্রদান করেছেন আর একজন (এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন) ৫১ লাখ টাকা কর প্রদান করেছেন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়ে বেলা ১১টায় নগরের একটি রেস্তোরাঁয় এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সুজনের রাজশাহী নগরের সভাপতি পিয়ার বক্স। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দিলীপ কুমার সরকার। অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আহমদ সফিউদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলার সমন্বয়কারী মিজানুর রহমান।

লিখিত বক্তব্যে দিলীপ কুমার সরকার বলেন, জাতীয়তাবাদী দলসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল অংশ না নেওয়ায় রাজনৈতিক দলভিত্তিক এই নির্বাচন কতটা অংশগ্রহণমূলক, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। একই বিবেচনায় ভবিষ্যতে এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। তবে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও ছোটখাটো অভিযোগ উঠলেও গাজীপুর, বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সামগ্রিকভাবে সুষ্ঠু হয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন।

Also Read: রাজশাহীতে রাশেদা সুলতানা বললেন, হাতপাখা প্রার্থীর ভোট বর্জনে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রার্থীদের সম্পদের হিসাবের যে চিত্র উঠে এসেছে, তাকে কোনোভাবেই সম্পদের প্রকৃত চিত্র বলা যায় না। প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই প্রতিটি সম্পদের মূল্য উল্লেখ করেন না, বিশেষ করে স্থাবর সম্পদের। আবার উল্লিখিত মূল্য বর্তমান বাজারমূল্য না, এটা অর্জনকালীন মূল্য। অধিকাংশ প্রার্থীর সম্পদের পরিমাণ প্রকৃতপক্ষে আরও অনেক বেশি বলে সুজন মনে করে। প্রকৃত সম্পদের চিত্র তুলে ধরতে হলে হলফনামার তথ্যের ছকটি অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, যুদ্ধাপরাধী, নারী নির্যাতনকারী, মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, ঋণখেলাপি, বিলখেলাপি, সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি, ভূমিদস্যু, কালোটাকার মালিক, কোনো অসৎ, অযোগ্য ও গণবিরোধী ব্যক্তিকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে ‘না ভোটের’ বিধান পুনরায় প্রবর্তনের আহ্বান জানায় সুজন।

Also Read: হিজড়া সুলতানা যেখানে যাচ্ছেন, লোকজন ঘিরে ধরছেন

অনুষ্ঠানে ১২ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, মামলা, প্রার্থী ও নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয়, প্রার্থীদের বার্ষিক আয়, মেয়র প্রার্থীদের সম্পদের পরিমাণ, প্রার্থীদের দায়দেনা, আয়কর প্রধানের চিত্রসংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

এই নির্বাচন নিয়ে সুজনের প্রত্যাশা তুলে ধরে বলা হয়, সব দলের অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের যে প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণ না হলেও যেসব দল ও প্রার্থীরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাঁরা সবাই যেন নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্টদের কাছে সম-সুযোগ ও সম-আচরণ পান। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন, সরকার, জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সব অংশীজন নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজ নিজ ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করে এই নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করবেন। তাঁদের প্রত্যাশা, যেন এই নির্বাচনে প্রকৃত অর্থেই গণরায়ের প্রতিফলন ঘটে।

বরিশালের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ইসলামী আন্দোলন সিলেট ও রাজশাহীর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় এই দুটি নির্বাচন আরও প্রতিযোগিতাহীন হয়ে পড়বে বলে মনে করে সুজন।

Also Read: নিরুত্তাপ নির্বাচনে সরব নৌকা