গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে পদ্মা সেতু এলাকায় ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে
গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে পদ্মা সেতু এলাকায় ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে

এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ

পদ্মা সেতু এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধ করে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা।

পদ্মা সেতু এলাকায় কিছুক্ষণের জন্য ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। বুধবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে পদ্মা সেতু হয়ে গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে প্রবেশকারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন তাঁরা।

বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফেসবুকে পদ্মা সেতু ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য ও সমন্বয়ক ইব্রাহীম নীরব। ৫টা ২০ মিনিটের দিকে শুরু করেন ব্লকেড কর্মসূচি। বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে পদ্মা সেতু এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত রয়েছেন এনসিপি সিরাজদিখান উপজেলার সমন্বয়ক নেওয়াজ খান, মুন্সিগঞ্জ জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. মোরসালীন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুন্সিগঞ্জ জেলার মুখপাত্র অবন্তিকা, যুগ্ম আহ্বায়ক উম্মে হানিসহ অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য ও সমন্বয়ক ইব্রাহীম নীরব বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে গেলেও তার দোসরেরা এখনো বাংলাদেশের মাটিতে রয়েছে। এর নমুনা আজ গোপালগঞ্জে দেখা গেছে। ফ্যাসিস্টের দোসরদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব। এই বাংলার মাটি থেকে ফ্যাসিস্টদের বিদায় করে ছাড়ব। আপাতত আমাদের ব্লকেড কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তবে আমরা সেতু এলাকায় সড়কের পাশে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) জিয়াউল হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ট্রাফিক পুলিশ, পদ্মা উত্তর থানা এবং ডিবি পুলিশের সদস্যরা সেতু এলাকায় রয়েছেন।

এদিকে গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ব্লকেড কর্মসূচির আওতায় এক ঘণ্টার জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে উভয় লেন আটকে অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধের পর বিকেল সাড়ে ৫টা ২৫ মিনিটের দিকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সরকারের প্রথম দায়িত্ব ছিল এ দেশের ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিচার করা। কিন্তু বিচার নিয়ে গড়িমসি আমরা দেখেছি। যার চূড়ান্ত ধৃষ্টতা আজ আমরা গোপালগঞ্জে দেখেছি। এসব সন্ত্রাসীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের প্রশ্নে আমরা দল-মতনির্বিশেষে একতাবদ্ধ থেকে এ সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করব।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তাঁর দোসররা এ দেশে রয়ে গেছে। তারা দেশে প্রতিনিয়ত অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি শক্ত হাতে ফ্যাসিবাদী দোসরদের দমন করতেন, তাহলে তাঁরা এই সাহস দেখাত না। যেকোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি পালনের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। অন্তর্বর্তী এনসিপির নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাঁরা যদি এই ঘটনা সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের গ্রেপ্তার না করে, তাহলে সারা দেশে আমরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলব।’

ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হয়েছে বগুড়ার শেরপুর, রাজবাড়ী ও সুনামগঞ্জেও। বগুড়ার শেরপুরে বুধবার বিকেল পাঁচটা থেকে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। অবরোধ চলে পৌনে এক ঘণ্টা। এ সময় উভয় লেনের সব ধরনের গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর অবরোধকারীরা মহাসড়ক থেকে চলে যান। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

রাজবাড়ীতে দুই ঘণ্টা একটি মহাসড়ক ও একটি আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ (ব্লকেড) করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিকেল পৌনে চারটা থেকে পৌনে ছয়টা পর্যন্ত রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে কর্মসূচি তুলে নেওয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, অবরোধের সময় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আটকে আছে। একইভাবে রাজবাড়ী কুষ্টিয়া-আঞ্চলিক মহাসড়কেও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আটকে আছে। ঢাকাগামী এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা বিভিন্ন ধরনের কয়েক শ যানবাহন আটকে আছে। এতে দুর্ভোগ দেখা দেয়।

রাজবাড়ী সদর থানার কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সেনাবাহিনীও আমাদের সহযোগিতা করছে।’

সুনামগঞ্জে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন। এনসিপির নেতা-কর্মীরা বিকেল চারটার দিকে পৌর শহরের আলফাত স্কয়ার এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা এখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন। এ সময় সড়কের যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। সড়কে অবস্থানকালে নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে নানা স্লোগান দেন। হামলার সঙ্গে জড়িত নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফ্যাসিবাদের কোনো স্থান হবে না। তাদের প্রতিহত করতে হবে। জুলাই আন্দোলনের চেতনায় তাদের সব নৈরাজ্য, ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।

টায়ার জ্বালিয়ে সাতক্ষীরায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত শহরের খুলনা রোড মোড়ে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

এ সময় আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলায় এমন হামলার সাহস দেখিয়েছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাউতলী এলাকায় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিকেল ছয়টা থেকে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেছেন এনসিপির নেতা–কর্মীরা। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, এনসিপির নেতা–কর্মীরা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ২০-৩০ মিনিট অবস্থান করেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে দলটির নেতা–কর্মীরা

নারায়ণগঞ্জে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে। এতে মহাসড়কে প্রায় আধাঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় এই কর্মসূচি পালিত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বিকেল পাঁচটার দিকে এনসিপির নেতা–কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় বাঁশ ফেলে দিয়ে অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরোধে আধাঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নিয়ে মহাসড়কের পাশে অবস্থান নেন নেতা–কর্মীরা।

এ বিষয়ে শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আধা ঘণ্টা পর এনসিপির নেতা–কর্মীরা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে।

ঢাকার সাভারে ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের দুটি স্থান অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। উপজেলার নবীনগরে জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে এবং জিরানী এলাকায় এই অবরোধ হয়। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধের পর নেতা–কর্মীরা মহাসড়ক থেকে চলে যান। এ ছাড়া নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের জিরানী এলাকায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

ফরিদপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন এনসিপির বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা। বিকেল পাঁচটার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের জনতা ব্যাংকের মোড়ে থেকে শুরু হয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে আবার জনতা ব্যাংকের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়। ঢাকা–খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মহাসড়ক অবরোধ করে করেন এনসিপির নেতা–কর্মীদের আরেকটি দল। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার সামনে মহাসড়কে অবরোধ শুরু হয়ে পৌনে ছয়টার দিকে শেষ হয়। এ সময় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় যানজটের সৃষ্টি হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিক থেকে সিলেট নগরের চৌহাট্টা মোড়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় সড়কে আগুন জ্বালিয়ে দেন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা। কর্মসূচি চলাকালে চৌহাট্টা এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নগরের জিন্দাবাজার-আম্বরখানা সড়ক, রিকাবিবাজার-মিরবক্সটুলা সড়কে যানজট দেখা দেয়। কর্মসূচি চলে বিকেল ৫টা ২০ মিনিট পর্যন্ত।

কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন এনসিপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। মহাসড়ক অবরোধে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ভোগান্তি দেখা দেয়। বিকেল পাঁচটার দিকে মহাসড়কের কুমিল্লার কোটবাড়ী নন্দনপুর এলাকায় এই অবরোধ করা হয়। পরে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পেয়ে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

জামালপুরে বিকেল পাঁচটার দিকে জামালপুর শহরের বিজয় চত্বর এলাকায় জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়ক আধা ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা। সড়কের মধ্যে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। পরে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের বিজয় চত্বর থেকে সরিয়ে দেন।

মানিকগঞ্জে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। সদর থানার পুলিশ, আন্দোলনকারী এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মানিকগঞ্জ সদরের জাগীর এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তাঁরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন তাঁরা। খবর পেয়ে সদর থানার ওসি এস এম আমান উল্লাহসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের সড়ক থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। আধা ঘণ্টা অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ সারিতে আটকা পড়ে বিভিন্ন যানবাহন।

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে নরসিংদীতে মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে ছাত্রজনতা। বুধবার বিকেল পাঁচটা থেকে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত শহরের জেলখানা মোড়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়

নরসিংদীতে বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত শহরের জেলখানা মোড়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। এ সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে জেলখানার মোড়ে জড়ো হয়। তাঁদের মুহুর্মুহু স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে জেলখানার মোড়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে বন্ধ হয়ে যায় মহাসড়কে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহন।

সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বগুড়া শহরের উপকণ্ঠ বনানী এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা। এতে যোগ দেয় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কিছুক্ষণ পর কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।

সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাঙামাটি শহরের রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে ফটক এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করেন এনসিপির নেতা–কর্মীরা। এর আগে শহরের মারী স্টেডিয়াম এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করা হয়। মিছিলটি শিল্পকলা একাডেমি, দক্ষিণ কালিন্দীপুর, বিজয়সরণি ও নিউমার্কেট এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসন এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। রাঙামাটি–চট্টগ্রাম সড়ক বন্ধ করে সমাবেশের কারণে দুই দিকে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। আধা ঘণ্টা পর কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

যশোর চাঁচড়া মোড়ে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেছেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। বিকেল পাঁচটার দিকে চাঁচড়া চৌরাস্ত মোড়ে সড়কের ওপরে দাঁড়িয়ে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা এই কর্মসূচি পালন করা হয়। যশোর-খুলনা, যশোর-ঝিনাইদহ ও যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের সংযোগস্থল চাঁচড়ার মোড়। ব্লকেডের কারণে সেখানে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়।

রাজশাহীতে বিক্ষোভ করেছেন এনসিপির নেতা–কর্মীরা। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় নগরের অলোকার মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে গিয়ে বিক্ষোভ শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন এনসিপির নেতা–কর্মীরা।

নওগাঁয় শহরে বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা। সমাবেশে বক্তারা বলেন, গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতা–কর্মীদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়েছে। তাঁরা এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তাঁরা।

(প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন প্রতিনিধি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মুন্সিগঞ্জ, বগুড়ার শেরপুর, রাজবাড়ী, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, কুমিল্লা, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, রাঙামাটি, যশোর অফিস, নওগাঁ ও নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সাভার, ফরিদপুর, বগুড়া, রাজশাহী)