Thank you for trying Sticky AMP!!

খনন শেষে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে চ্যানেলটি হস্তান্তর উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন। গতকাল পায়রা বন্দরের সম্মেলনকক্ষে

পায়রা বন্দর: রাবনাবাদ চ্যানেলের খননকাজ শেষ, মে মাসে প্রথম টার্মিনালের উদ্বোধন

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত পায়রা সমুদ্রবন্দরের পাশ দিয়ে বহমান ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রাবনাবাদ চ্যানেলের খননকাজ শেষ হয়েছে। পাশাপাশি বন্দরের প্রথম টার্মিনালের উন্নয়নমূলক কাজও শেষ হয়েছে। এখন চলছে সৌন্দর্যবর্ধনসহ খুঁটিনাটি কাজ। আগামী মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘প্রথম টার্মিনাল’–এর উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বেলজিয়ামভিত্তিক কোম্পানি জান ডি নাল চ্যানেলটির খননকাজ বাস্তবায়ন করেছে। কাজ শেষে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে চ্যানেলটি হস্তান্তর উপলক্ষে গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় পায়রা বন্দরের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মো. মহিববুর রহমান, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমোডর রাজীব ত্রিপুরা, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কমান্ডার রাফিউল হাসাইন, সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন জাহিদ হোসেন, চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার মাহমুদুল হাসান, হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন এস এম শরীফুর রহমান, জান ডি নালের প্রকল্প পরিচালক ইয়ান ময়েনস, নেদারল্যান্ডভিত্তিক সিডিআর ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি সিফ্রিয়ান হ্যান্ডরিকস, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মো. আজিজুর রহমান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, পায়রা বন্দরের পার্শ্ববর্তী রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং প্রকল্পের মাধ্যমে পায়রা বন্দর চ্যানেলের গভীরতা ১০ দশমিক ৫ মিটারে উন্নীত করা হয়েছে। যার ফলে পায়রা বন্দর বর্তমানে দেশের গভীরতম বন্দরে রূপান্তরিত হয়েছে। এতে ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ৩২ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট ‘প্যানাম্যাক্স’ আকৃতির বড় জাহাজ ৪০-৫০ হাজার মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে সরাসরি বন্দরে ভিড়তে পারবে। বন্দরের এই সক্ষমতার মাধ্যমে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রসার ঘটবে এবং দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত পায়রা বন্দর–সংলগ্ন রাবনাবাদ চ্যানেল

মোহাম্মদ সোহায়েল আরও জানান, প্রথম টার্মিনালটি চালু হলে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। বন্দরের রাজস্ব আয় বাড়বে, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তা ছাড়া বন্দর–সংলগ্ন চ্যানেলটি ১০ দশমিক ৫ মিটার গভীর হওয়ায় ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে খাদ্যশস্য, সার, আমদানি করা গাড়ি ও অন্যান্য বাণিজ্যিক পণ্য রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ নগরীতে পৌঁছানো যাবে।

ভবিষ্যতে পায়রা বন্দরের সঙ্গে ১ হাজার ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের মাল্টিপারপাস টার্মিনাল, ১ হাজার ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ২টি কনটেইনার টার্মিনাল, লিকুইড বাল্ক টার্মিনাল, কোল টার্মিনাল ও এলএনজি টার্মিনাল যুক্ত হবে বলে জানান পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন এস এম শরীফুর রহমান জানান, ২০২২ সালের ১ আগস্ট জান ডি নাল রাবনাবাদ চ্যানেলের খননকাজ শুরু করে। ক্যাপিটাল, মেইনটেন্যান্স ড্রেজিংসহ এতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা। খননের ফলে ২০০ মিটার দীর্ঘ এবং ৩০ মিটার প্রস্থের জাহাজ চ্যানেলে চলাচল করতে পারবে।

পটুয়াখালী চেম্বার্স অব কমার্সের সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, রাবনাবাদ চ্যানেলের খনন এবং প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় এ বন্দরকে ঘিরে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদানি-রপ্তানিকারকদের জন্য পায়রা বন্দর ব্যবহার করে সড়কপথে পণ্য পরিবহন সহজ হবে। আগামীতে দেশের অর্থনীতিতে পায়রা বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।