
মঞ্চে দাঁড়িয়ে কেউ গাইছেন গান, কেউ গিটারের তারে তুলছেন সুর। দর্শকেরাও সেই সুর মোহিত হয়ে উপভোগ করছেন। কেউ দিচ্ছেন করতালি, কেউবা মুঠোফোনের ফ্ল্যাশ জ্বেলে শিল্পীদের উৎসাহ দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে মঞ্চের আলোকসজ্জা তো আছেই।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) বাস্কেটবল মাঠে গিয়ে দেখা যায় এ দৃশ্য। উৎসবমুখর এ পরিবেশের আয়োজন করেছিল চুয়েটের সাংস্কৃতিক সংগঠন জয়ধ্বনি। সংগঠনটির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ আয়োজন করা হয়।
সংগঠনটির দুই দিনব্যাপী এ উৎসবে দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া সংগঠনটির সাবেক ও বর্তমান সদস্যরাও রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে এ উৎসব শেষ হয়েছে। এ উৎসব ঘিরে মাঠের চারপাশে বসে বিভিন্ন ধরনের স্টল। এতে ছিল নানা পণ্য, খাবার ও শীতের পিঠা।
উৎসবের সহযোগিতায় রয়েছে প্রথম আলো, পৃষ্ঠপোষকতায় ইলেকট্রনিক কোম্পানি ‘হ্যাভিট’, খাদ্যসহায়তায় ‘পাহাড়িকা কিচেন’ আর বেভারেজ সহায়তায় মোজো।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ উৎসব। এরপর পর্যায়ক্রমে মঞ্চে গান পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিল্পীরা। বিরতির পর রাত নয়টায় আবার শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। একে একে মঞ্চে গান পরিবেশন করেন আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে পরিবেশকদের সম্মাননা দিয়ে প্রথম দিনের উৎসব শেষ হয়।
জমকালো এ আয়োজন দেখে উচ্ছ্বসিত ছিলেন শিক্ষার্থীরা। উৎসবে আসা কুয়েট শিক্ষার্থী জুলকার নাইন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জয়ধ্বনির এ আয়োজন ছিল অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। আর এ সংগঠনের সদস্যদের সহযোগিতা ও আতিথেয়তা আমাদের সত্যিই অভিভূত করেছে।’
জয়ধ্বনির সভাপতি চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘জয়ধ্বনির ২৫ বছরের এই যাত্রা আসলে আমাদের একসঙ্গে বেড়ে ওঠার ইতিহাস, যা মূলত সংস্কৃতি আর বন্ধুত্বে গড়া। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের এমন উৎসবমুখর অংশগ্রহণ আমাদের গভীরভাবে সম্মানিত করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, সংস্কৃতির আলো যত ছড়িয়ে পড়বে, ক্যাম্পাস তত প্রাণবন্ত ও প্রগতিশীল হবে।’
গতকাল দুপুরে মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে দ্বিতীয় দিনের এ উৎসব শুরু হয়। শোভাযাত্রা, কেক কাটাসহ গতকালও ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। এ অনুষ্ঠান হয় গভীর রাত পর্যন্ত। রাত নয়টা থেকে প্রদর্শিত হয় আন্তবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হওয়া সেরা তিনটি ভিডিও কনটেন্ট। এরপর অতিথিদের বক্তব্য শেষে আবারও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এতে গান পরিবেশন করে ব্যান্ড দল ওয়ারফেজ।