কুমিল্লায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সোমবার বিকেলে নগরের কান্দিরপাড় এলাকায়
কুমিল্লায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সোমবার বিকেলে নগরের কান্দিরপাড় এলাকায়

দুই পরাজিত শক্তি দেশে–বিদেশে বসে নির্বাচন বানচাল করার পাঁয়তারা করছে: গয়েশ্বর রায়

‘একাত্তরের পরাজিত শক্তি আর ৭ নভেম্বরের পরাজিত শক্তি দেশে ও বিদেশে বসে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করার পাঁয়তারা করছে’, মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার বিকেলে কুমিল্লায় আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সরকার নির্বাচন দিতে চায় যথাসময়ে। আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন দিতে চায় যথাসময়ে। তাদের আন্তরিকতা নিয়ে আমার প্রশ্ন নেই, কিন্তু তাদের আন্তরিকতা যথেষ্ট নয়। পরশু ভিপি নুরের ওপরে যে ঘটনা ঘটেছে, আজকে আদালত কর্তৃক ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করা—আমাদের মনে হয়, আমরা আরেকটি যুদ্ধের সম্মুখীন হচ্ছি। একাত্তরের পরাজিত শক্তি আর আর ৭ নভেম্বরের পরাজিত শক্তি দেশে ও বিদেশে বসে তারা নির্বাচনকে বানচাল করার পাঁয়তারা করছে।’

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকায় বিকেলে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী। সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লার সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম, কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান সরকার, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিন-উর রশিদ (ইয়াছিন)। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া। কুমিল্লা দক্ষিণ ও উত্তর জেলা এবং কুমিল্লা মহানগর বিএনপির নেতা–কর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর রায় আরও বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেছি সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের জন্য। কিন্তু আমরা পিআর-এর (সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন) জন্য আন্দোলন করিনি। এই পিআর কি খায়, না মাথা দেয়—আমি জানি না। আমি ৬৪ বছর রাজনীতি করি, কিন্তু আজও বুঝলাম না পিআর কী জিনিস। তাহলে সাধারণ মানুষ বুঝবে কীভাবে? তার মানে এরা একটু বেশিই মাথায় উঠে গেছে। তারা ভাবছে যে ক্ষমতায় এসে পড়েছে। নির্বাচন না হলে তাদের লাভ।’

নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য নেতা–কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে। সুতরাং কে প্রার্থী হবেন কে হবেন না, কে কত ফেস্টুন বানালেন কে বানালেন না, কে কত লোক নিয়ে আসছেন, কার কার নামে স্লোগান দেওয়ার জন্য—এটা কিন্তু যথেষ্ট নয়। বিএনপির বয়স ৪৭, বিএনপি জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়াসহ ক্ষমতা ছিল প্রায় ১৪ বছর, বাকি সময়টা কিন্তু বিরোধী দলে ছিল বিএনপি। সুতরাং বিরোধী দলে থাকার অভিজ্ঞতাও বিএনপির অনেক। বড় বড় সুবিধাবাদী নেতারা অনেক সময় দল ত্যাগ করেছেন, কিন্তু তৃণমূলের কর্মীরা কখনো বিএনপির বিরুদ্ধে যায়নি, খালেদা জিয়াকে ছেড়ে যায়নি, তারেক রহমানকেও ছেড়ে যায়নি।’

আলোচনা সভা শেষে শোভাযাত্রাটি কান্দিরপাড় এলাকা, মনোহরপুর, রাজগঞ্জ, মোগলটুলি, সার্কিট হাউস মোড়, জিলা স্কুল সড়ক হয়ে কান্দিরপাড়ে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিএনপির কয়েক হাজার নেতা–কর্মী অংশগ্রহণ করেন।