নিহত তিনজনের বাড়ির সামনে মানুষের ভিড়। সম্প্রতি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে
নিহত তিনজনের বাড়ির সামনে মানুষের ভিড়।  সম্প্রতি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে

মুরাদনগরে তিনজনকে হত্যা

মামলা ডিবিতে, ঘটনাস্থলে তদন্ত কর্মকর্তা

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তের দায়িত্ব সোমবার রাতে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলাটি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। এ জন্য সোমবার মামলার তদন্তভার গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যাঁরা জড়িত এবং প্রকৃত অপরাধী, তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা শুরু থেকেই খেয়াল রাখছি, যেন কোনো নিরপরাধ মানুষ এখানে হয়রানির শিকার না হন।’

এর আগে মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিল মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজকেই আমাকে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তভার পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। হত্যাকাণ্ডের স্থান ছাড়াও পুরো এলাকাটি ঘুরে দেখেছি। এখনো বেশির ভাগ বাড়ি জনশূন্য। বিশেষ করে পুরো গ্রামই পুরুষশূন্য বলা যায়।’

গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে ‘মব’ সৃষ্টি করে মা, মেয়ে–ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)।

হত্যার ঘটনায় শুক্রবার রাতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহকে। এরই মধ্যে এ মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া আট আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। সোমবার দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মমিনুল হকের আদালতে এই আবেদন করা হয়। বুধবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. সাদেকুর রহমান।