ঝড়ে পড়া দুটি নারকেল নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ৮ জন আহত

মারধর
প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ঝড়ে পড়া দুটি নারকেল নিয়ে দুই পক্ষের কয়েক দফা বাগ্‌বিতণ্ডা, হাতাহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার সকাল আটটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়ে কুমারখালী ও কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহত ব্যক্তিরা হলেন যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের সোনা শেখ (৪৫), তাঁর স্ত্রী তৃষ্ণা খাতুন (৪০) ও ছেলে আশিক (২৫), সমছের বিশ্বাস (৬৭), সমছেরের ছেলে আনোয়ার বিশ্বাস (৩৪) ও মনিরুল ইসলাম (৪২), মেয়ে জুলেখা খাতুন (৪৫) এবং মিজানুর রহমান (৪০) নামের এক ব্যক্তি।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঝড়ে বল্লভপুর গ্রামের কৃষক চঞ্চলের গাছ থেকে দুটি নারকেল পড়ে। আনোয়ারের স্ত্রী স্বপ্না খাতুন তা কুড়িয়ে পান। আজ সকাল আটটার দিকে স্বপ্নার কাছে চঞ্চলের চাচি তৃষ্ণা খাতুন নারকেল চাইতে গেলে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতি ও মারামারি হয়। এতে তৃষ্ণা ও সমছের বিশ্বাস আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ ঘটনায় দুপুরে উভয় পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর কয়েক দফা চলে উভয় পক্ষের বাগ্‌বিতণ্ডা। একপর্যায়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দেশীয় অস্ত্র হাঁসুয়া, কাঠের বাটাম, বাঁশের লাঠি নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন আহত হন।

বিকেলে সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা যায়, আহত ব্যক্তিদের কেউ বারান্দায় বসা, কেউবা জরুরি বিভাগে। তাঁদের চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসক। তাঁদের হাত, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত চিহ্ন। এ সময় গাছের মালিক চঞ্চল বলেন, গাছ থেকে দুটি নারকেল পড়েছিল। তা নিয়ে উভয় পক্ষ কয়েক দফা মারামারি হয়েছে। দুই পক্ষেরই অনেকেই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আহত ব্যক্তিরা সবাই চাচাতো ভাই-বোন।

আহত সোনা শেখের স্ত্রী তৃষ্ণা খাতুন বলেন, ‘কুড়ানো নারকেল চাইতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন হাঁসুয়া, দা, কাঁচি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। আমি, আমার স্বামী ও সন্তান হাসপাতালে ভর্তি।’ অপর পক্ষের সমছের বিশ্বাস বলেন, ‘সামান্য নারকেল নিয়ে সকালে একবার মারেছে। থানায় অভিযোগ দিছি। অভিযোগ দিয়ে বাড়িতে গেলে সজ্জিতভাবে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করেছে। আমিসহ সন্তানেরা গুরুতর আহত। থানায় মামলা করা হবে।’

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হলেন, রোগীদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, দুটি নারকেল নিয়ে উভয় পক্ষ দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সকালের ছোট ঘটনায় দুপুরে উভয় পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেছে। বিকেলে আবার সংঘর্ষে জড়িয়েছেন তাঁরা। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।