Thank you for trying Sticky AMP!!

নিহতদের দুজনের বাড়ি নোয়াখালীতে, তাঁদের আয়ে সংসার চলত

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মো. হেলাল উদ্দিন ও মো. শাহেদুল ইসলাম

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনের বাড়ি নোয়াখালীতে। এর মধ্যে মো. হেলাল উদ্দিনের (৩৪) বাড়ি জেলার চাটখিল ও মো. শাহেদুল ইসলাম ওরেফ শাহেদের (২৭) বাড়ি সেনবাগ উপজেলায়। তাঁদের বাড়িতে চলছে মাতম। নিহত ব্যক্তিরা ছিলেন তাঁদের পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তিরা হলেন চাটখিল উপজেলার নাহারখিল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম রামনারায়ণপুর গ্রামের ভূঁইয়াজি বাড়ির মৃত মো. হুমায়ুন কবিরের ছেলে মো. হেলাল উদ্দিন ও সেনবাগ উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামের মালেক মোল্লার বাড়ির শরিয়ত উল্লাহর ছেলে মো. শাহেদুল ইসলাম ওরেফ শাহেদ।

Also Read: সৌদিতে ওমরাহ যাত্রীদের বাস দুর্ঘটনা, আট বাংলাদেশি নিহত

হেলালের ছোট ভাই মো. রিপন বলেন, এক বছর আগে জীবিকার সন্ধানে তাঁর ভাই মো. হেলাল উদ্দিন সৌদি আরবে পাড়ি জমান। এরপর তিনি একটি  রেস্তোরাঁয় চাকরি নেন। তাঁর হাজাবি নামের তিন বছর বয়সী একটি মেয়েসন্তান আছে। রিপন বলেন, তাঁর ভাইসহ আরও চারজন ওমরাহ পালন করার উদ্দেশ্যে একসঙ্গে পবিত্র মক্কা নগরীর দিকে যাত্রা করেন। যাত্রাপথে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনই মারা যান।

গত বছরের এপ্রিল মাসে পরিবারের বড় ছেলে শাহেদুল ইসলাম ওরফে শাহেদ জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব যান। সেখানে তিনি একটি দোকানে কর্মরত ছিলেন। গতকাল ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে কর্মস্থল থেকে রওনা হলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।

শাহেদুলের গ্রামের বাড়িতে বাবা শরীয়ত উল্লাহ ছাড়াও আছেন মা, ছোট ভাই ও বোন। শাহেদুলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে গোটা পরিবারে শোকের ছায়া। ছেলের জন্য আহাজারি করতে করতে একাধিকবার জ্ঞান হারিয়েছেন মা পারভীন আক্তার।

শাহেদুলের বাবা শরীয়ত উল্লাহ বলেন, গত রমজান মাসে তার ছেলে জীবিকার সন্ধানে সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছিল। অনেক ধারদেনা করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছেন। এই ছেলেই তাঁর পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন। ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গোটা পরিবারে অন্ধকার নেমে এসেছে।

Also Read: সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ

মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ আলম ওরফে রিগান বলেন, শাহেদুল ছেলেটি অত্যন্ত ভদ্র প্রকৃতির ছিলেন। সংসারের হাল ধরার জন্য গত বছর তিনি সৌদি আরব গিয়েছিলেন। পরিবারের একমাত্র চালিকা শক্তিকে হারিয়ে পরিবারের সবাই এখন দিশাহারা। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

গতকাল মঙ্গলবার সৌদি আরবের স্থানীয় সময় বিকেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওমরাহ যাত্রীদের বহনকারী একটি বাস ইয়েমেন সীমান্তবর্তী আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনার কবলে পড়া বাসে ৪৭ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জন বাংলাদেশি। দুর্ঘটনায় ২২ জনের প্রাণহানি ঘটে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি এবং তাঁদের মধ্যে নোয়াখালীর প্রবাসী শাহেদুল ও হেলাল ছিলেন।