কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক) ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ বিকালে তোলা
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক) ও  স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ বিকালে তোলা

রোহিঙ্গা শিবিরে অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম (বীর প্রতীক) ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ সোমবার বেলা তিনটার দিকে কক্সবাজার থেকে সড়কপথে দুই উপদেষ্টা উখিয়ার বালুখালী (ক্যাম্প–১৮) আশ্রয়শিবিরে পৌঁছান। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল হাফিজ। বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা আশ্রয়শিবির ত্যাগ করেন।

শিবিরে পৌঁছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতর ও বাইরে যেসব অস্ত্রধারী ও সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পের নিরাপত্তার জন্য দেওয়া কাঁটাতার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নতুনভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও বলেন তিনি।

মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে হতাহতের খবর পাওয়া যায়। আর যেন মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

শিবিরের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে দুই উপদেষ্টা সেখানকার একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে ওঠেন। এ সময় তাঁদের সামনে আশ্রয়শিবিরের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কর্মকর্তারা উপদেষ্টাদের জানান, বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৪ লাখের বেশি। এর মধ্যে আট লাখ এসেছেন ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। গত আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। উল্টো গত এক বছরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা। নতুন আসা ১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা নিবন্ধিত হয়েছেন। অবশিষ্ট ৩০ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বিভিন্ন রোহিঙ্গার ঘরে অবস্থান করছেন।

পরিদর্শনের সময় দুই উপদেষ্টা রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে ক্যাম্পে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সঙ্গেও কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়েরও বড় দায় আছে। তারা এত দিন ধরে যে সহায়তা দিয়ে আসছে, এটা কমে গেলে সংকট সৃষ্টি হবে। এই সংকট বাংলাদেশের একার বহন করার কথা নয়। বিশ্ব সম্প্রদায়সহ সবাইকে মিলে এই সংকট মোকাবিলা করতে হবে, তা না হলে এটা অমানবিক হবে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে সব সময় বাস্তবতাটা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।