জামালপুরে যমুনার পানি আরও বেড়েছে, বন্যার আশঙ্কা

জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ইসলামপুর উপজেলার আমতলী বাজার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যমুনার পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে মাঝারি বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদীতীরবর্তী ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী, পাথর্শী, সাপধরী, বেলগাছা, কুলকান্দি, নোয়ারপাড়া; দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিজাকাজানী, চুকাইবাড়ী, বাহাদুরাবাদ ও পৌরসভার আংশিক; মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেরদহ, জোড়খালী, বালিজুড়ী; মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া, ঝাউগড়া, কুলিয়া, নাংলা ও আদ্রা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ওই সব ইউনিয়নের চরাঞ্চলের প্রায় দুই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গত রোববার থেকে যমুনার পানি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় বন্যার শঙ্কায় আছে, এসব অঞ্চলের হাজারো মানুষ। এসব এলাকার অনেক ফসলি জমিও পানিতে তলিয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জামালপুর কার্যালয়ের পানি পরিমাপক আবদুল মান্নান আজ সকাল ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে খুব ধীর গতিতে পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা আরও কিছুটা পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে মাঝারি ধরনের বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে। তবে বড় ধরনের কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই।

ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পানি বাড়লেই সবার প্রথম চিনাডুলী আক্রান্ত হয়। গত বুধবার বিকেল থেকে বামনা, পূর্ব বামনা, বামনা বাজার, দেলিরপাড়, শিংভাঙা, আজমবাদ, বলিয়াদহ, ডেবরাইপ্যাচ, পশ্চিম দেলিরপাড়, মাছিপাড়া ও দেওয়ানপাড়া গ্রামের বেশির ভাগ আঙিনায় হাঁটুপানি। অনেকে গবাদিপশু নিয়ে উঁচু স্থানে রেখেছে। বেশির ভাগ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পানি উঠে গেছে।

জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বেড়ে তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। গতকাল বুধবার সকালে মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া এলাকায়

নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া এলাকার ব্যবসায়ী কবীর উদ্দিন বলেন, নোয়ারাপাড়া যমুনার একদম তীরবর্তী ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের বিভিন্ন চরাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেকের ঘরবাড়ির আঙিনায় পানি গিয়ে ঠেকেছে। চরাঞ্চলের লোকজন গবাদিপশু নিয়ে রাস্তা বা উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। পানি আরও বাড়লে মানুষের ঘরের ভেতর পানি উঠে যাবে।

জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, বন্যা মোকাবিলায় ৫টি উপজেলায় ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুকনা ও গবাদিপশুর খাবারের বরাদ্দও রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও পানিবন্দী হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। পানি কিছু কিছু নিম্নাঞ্চলে ঢুকেছে। তবে এখনো লোকালয়ে সেভাবে ঢোকেনি।