Thank you for trying Sticky AMP!!

জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার জামাতাকে মুক্ত করতে স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন সাতক্ষীরার শরিফুল

ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে ১০ জনকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছেন সিটিটিসির সদস্যরা। শনিবার সকালে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী পূর্ব টাট্রিউলি গ্রামে

জঙ্গি সন্দেহে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে গ্রেপ্তার ১৩ জনের মধ্যে সাতক্ষীরার একই পরিবারের তিনজন আছেন। এই তিনজন হলেন বাবা শরিফুল ইসলাম, মা আমেনা বেগম ও তাঁদের মেয়ে মোছা. হাবিবা বিনতে শরিফুল। জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার জামাতা আরিফুল ইসলাম ওরফে শান্তকে (২৪) জামিনে মুক্ত করতে গত ২৫ জুলাই বাড়ি থেকে তিনজন একসঙ্গে বের হন। এর পর থেকে তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে বাড়ির লোকজন কিছুই জানতেন না বলে দাবি করলেন।

গ্রেপ্তার তিনজনের বাড়ি সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ নলতা গ্রামে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে ওই গ্রামে যাওয়ার পথে দেখা যায়, তালা-পাইকগাছা সড়কের গোনালী এলাকায় ছোট একটি দোকান শরিফুলের। দোকানে ভ্যান ও সাইকেল মেরামতের কাজ হতো। তিনি মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে শরিফুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বসতঘরটি তালাবদ্ধ।

শরিফুলের বড় ভাই নজরুল মোড়ল বলেন, তাঁরা গরিব মানুষ। তাঁরা তিন ভাই। ছোট ভাই শরিফুল ভ্যান-সাইকেল মেরামত করে সংসার চালাতেন। বাকি দুই ভাই দিনমজুর। প্রতিবছর ফরিদপুরে জাকের পার্টির ওরস শরিফে যেতেন শরিফুল। কোনো দলের সঙ্গে তাঁর ভাই যুক্ত নন। ভাই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, তা তিনি কিছুতেই মানতে পারছেন না।

Also Read: ‘ওরে ডাক্তার বানাইতে আমি যে কী কষ্ট করেছি, আর ও হইল জঙ্গি’

নজরুল ইসলাম বলেন, তাঁর ভাইয়ের মেয়ে হাবিবার সঙ্গে একই এলাকার আরিফুলের বছর তিনেক আগে বিয়ে হয়। আরিফুলদের বাড়ি যশোর উপজেলার মনিরামপুর সদরে। তাঁর বাবা বজলুর রহমান পুলিশের কনস্টেবল ছিলেন। বাবা-মায়ের বিরোধের পর মা আরিফুলকে নিয়ে বাবার বাড়ি তালায় চলে আসেন। এসএসসি পাস করার পর তিনি কাজ শুরু করেন। বছর দুয়েক আগে হঠাৎ একদিন শোনেন, সিরাজগঞ্জ থেকে আরিফুল জঙ্গি সন্দেহ গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি এখনো কারাগারে।

প্রতিবেশী আবদুল খালেক বলেন, শরিফুলকে তিনি কখনো খারাপ কাজ করতে দেখেননি। শুনেছেন জামাতাকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে জুলাই মাসে দুটি গরু বিক্রি এবং ১০ কাঠা জমি বন্ধক রেখে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে সিরাজগঞ্জ গিয়েছিলেন স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে। গতকাল শনিবার শোনেন, তাঁরা মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার একটি নির্জন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

Also Read: দুই মাস আগে আস্তানা, গ্রেপ্তার ১০ জনের মধ্যে আছেন চিকিৎসকের স্ত্রী

তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বলেন, শরিফুলকে এলাকায় জঙ্গি বা অন্য কোনো দলের কর্মকাণ্ডে দেখা যায়নি। তাঁর মেয়ে হাবিবার কর্মকাণ্ড বেশ কিছুদিন ধরে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, শরিফুল ইসলাম কিংবা তাঁর পরিবারের সদস্যদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। জমি বন্ধক ও গরু বিক্রি করে ২৫ জুলাই এলাকা ছেড়েছেন তিনি। তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি কারাগারে থাকা জামাতাকে জামিনে মুক্ত করতে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। তাঁদের সম্পর্কে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে।

Also Read: ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে গ্রেপ্তার চিকিৎসকের স্ত্রী ২৬ জুলাই থেকে নিখোঁজ ছিলেন