Thank you for trying Sticky AMP!!

খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের বাসটি পদ্মা সেতুতে ওঠার আগে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সেটি ছিটকে পড়ে। বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়

তদন্ত প্রতিবেদনে এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনার যেসব কারণ ওঠে এল

পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে ১৯ জনের প্রাণহানির ঘটনায় গঠিত জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার জন্য প্রধান চারটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৪টি সুপারিশ দিয়েছে তদন্ত কমিটি। আজ বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুনের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পল্লব কুমার হাজরা।

গত রোববার খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ে থেকে খাদে পড়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে। তখন মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) পল্লব কুমার হাজরা এবং কমিটির সদস্যরা হলেন মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মনিরুজ্জামান ফকির, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসানাত-ই-রাব্বি ও মাদারীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হোসেন।

Also Read: পুলিশকে ‘খুশি করে’ এক্সপ্রেসওয়েতে চলছে অবৈধ বাস

তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে, এক্সপ্রেসওয়েতে বাসটি চলার সময় বেশি গতি ছিল। চালকের পেশাদার লাইসেন্স থাকলেও ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না। এর সঙ্গে চালকের পেশাদারি দক্ষতার ঘাটতি ও বৃষ্টিবিঘ্নিত পরিবেশে চালকের মুহূর্তের অসচেতনতায় পিচ্ছিল রাস্তায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত কমিটি এমন তথ্য পেয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পল্লব কুমার হাজরা।

এত প্রাণহানির কারণ হিসেবে তদন্ত কমিটি বলেছে, এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশে গার্ড রেইল না থাকায় বাসটি বিনা বাধায় রাস্তার পাশে পড়ে যায়। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যায়। এক্সপ্রেসওয়েতে একমুখী রাস্তায় দুই লেন অপ্রতুল। দুই লেনের অতিরিক্ত লেন না থাকায় ভিন্ন গতির যানবাহন প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়, যা গাড়ি চালনায় বিঘ্ন ঘটনায়। বাসটির নিবন্ধন নিয়েও প্রতিবেদনে তথ্য আছে। সেখানে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির নিবন্ধন সাময়িক স্থগিত রাখার পরও ফিটনেস মেয়াদোত্তীর্ণ থাকায় তা এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলের উপযোগী ছিল না। অনুপযোগী বাসটি মহাসড়কে চলানোয় আইন লঙ্ঘিত হয়েছে।

Also Read: ‘এক্সপ্রেসওয়েতে এত বড় দুর্ঘটনা আগে কেউ দেখেনি’

এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা রোধে ১৪টি সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির বৈধ কাগজপত্র নিয়ে মহাসড়কে গাড়ি চালানো; এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী দ্রুতগতির গাড়ির যাত্রীদের সিটবেল্ট পরা; গাড়ির ইন্টেরিয়র নরম বস্তু দিয়ে তৈরি করা; এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশে গার্ড রেইল স্থাপন নিশ্চিত করা; ভবিষ্যতে নির্মিতব্য এক্সপ্রেসওয়েতে একমুখী রাস্তায় কমপক্ষে তিন লেনের ব্যবস্থা রাখা ও উভয় মুখে কমপক্ষে ছয় লেনের ব্যবস্থা করা, মহাসড়কে চলাচলকারী গাড়ির সব হালনাগাদ তথ্য একটি সমন্বিত ডেটাবেজে রেখে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা; দিনের নির্দিষ্ট সময়ে, বিশেষ করে রাতে, ভোরে ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গাড়ির গতিসীমা অপেক্ষাকৃত কমিয়ে গাড়ির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি।

Also Read: এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি