জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক নেতা মারলেন আরেক নেতাকে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

বান্ধবীকে ‘অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির’ অভিযোগকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা আরেক নেতাকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার বিচার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মারধরের শিকার আওলাদ মিয়া। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের (স্নাতকোত্তর) শিক্ষার্থী এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র। আওলাদ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক।

এদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সবুজ রায়ের দাবি, ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা মিটমাট করবেন। সবুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক।

ঘটনাটি সমাধান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাজ করছেন বলে জানান অভিযুক্ত সবুজ রায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয় সূত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে স্নাতকোত্তরের একজন ছাত্রীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মো. নাঈমের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ সময় নাঈম তাঁর উদ্দেশে ‘অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি’ করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন ওই ছাত্রী। বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ওই ছাত্রী ও তাঁর বন্ধু সবুজ রায় মিলে নাঈমের শার্টের কলার ধরে টেনে নিয়ে যান। এ সময় নাঈমকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে আওলাদ মিয়াকে মারধর করেন সবুজ রায়। পরে ওই ছাত্রী আওলাদের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন। পরে আওলাদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মারধর করার পর সবুজ রায় ও তাঁর বান্ধবী সেখান থেকে চলে যান। পরে মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগের কয়েক নেতা সেখানে যান। তাঁরা সবুজের বন্ধু দর্শন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন।

আওলাদ মিয়া বলেন, ‘আমরা গেট দিয়ে প্রবেশের সময় আমার বন্ধু নাঈমকে একটি মেয়ে (সবুজের বান্ধবী) কলার ধরে মারধর করতে উদ্যত হয়। সে দাবি করে, নাঈম নাকি ধাক্কা দিয়ে চলে গেছে। এ সময় আমি তাকে শান্ত করতে গেলে তার বন্ধু সবুজ আমার ওপরও চড়াও হয়। কথা বলার একপর্যায়ে পাশে থাকা দোকানের চেয়ার দিয়ে আমাকে মারতে শুরু করে। সেই সঙ্গে মেয়েটি পাশে পড়ে থাকা ইট দিয়ে মারতে শুরু করে। মারতে মারতে তারা আমাকে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে নিয়ে যায়। তারপরও আমাকে ছাড়ছিল না।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সবুজ রায় বলেন, ‘আমাদের কিছু ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছিল, তখন কথা-কাটাকাটি হয়েছে, কিন্তু মারধরের ঘটনা ঘটেনি।’ ঘটনাটি সমাধান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল টিম উপস্থিত হয়েছিল। আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’