জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরণ অনশনে অস্থায়ী কর্মচারীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক মজুরিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মচারীরা চাকরি স্থায়ীকরণের একদফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। সোমবার বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক মজুরিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মচারীরা চাকরি স্থায়ীকরণের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশনে বসেন তাঁরা। সন্ধ্যা ছয়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই অবস্থান করছিলেন। চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

অনশন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্তাব্যক্তি তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যাননি বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ছয়টি আবাসিক হল পরিদর্শনে গিয়ে বেলা একটার দিকে অনশনরত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম। তিনি আন্দোলনকারীদের বক্তব্য শোনেন এবং তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। নতুন আবাসিক হলগুলোতে আন্দোলনকারীদের চাকরি দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আফরোজা সুপারিশ করেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ৭ জন ও চতুর্থ শ্রেণির ১৪৯ জন কর্মচারী ‘দৈনিক মজুরি’ ভিত্তিতে কর্মরত। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন না থাকায় তাঁদের নিয়োগ স্থায়ী করা সম্ভব হচ্ছে না।

অনশনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা ইমাম হলের পিয়ন নাসরিন আক্তার বলেন, ‘আমরা চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করছি। বিভিন্ন সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও ইউজিসির দোহাই দিয়ে আমাদের চাকরি স্থায়ী করা হয়নি। এখন আমাদের পক্ষে আর ধৈর্য ধরা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে অনশনে বসেছি।’

শেখ হাসিনা হলের মালি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ ১১ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেবা দিয়ে মাসে মাত্র ১২ হাজার টাকা বেতন পাই। এই টাকা দিয়ে সংসার চলে না। এ ছাড়া আমাদের সন্তানেরাও পোষ্য কোটার সুবিধা পাচ্ছে না। তাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে।’

অনশনরত ব্যক্তিদের বিষয়ে দিল আফরোজা বেগমের সুপারিশ অনুযায়ী কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নূরুল আলম। তিনি বলেন, ‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা মূলত চতুর্থ শ্রেণির অস্থায়ী কর্মচারী। নতুন হলগুলোতে তাঁরা আবেদন করলে আমরা সর্বোচ্চ বিবেচনা করব।’