নিহত শাহজালাল
নিহত শাহজালাল

রেললাইনের পাশে লাশ

পাবনা নেওয়ার সময় পালান মানসিক ভারসাম্যহীন শাহজালাল, কক্সবাজারে এসে মৃত্যু

কক্সবাজার শহরের লিংক রোড এলাকায় শুক্রবার সকালে পুলিশের উদ্ধার করা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। নিহতের নাম শাহজালাল প্রকাশ শাহজাহান (৪৫)। তিনি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার পাচরুকি বাজারের শেরপুর গ্রামের ইসহাক আলীর ছেলে।

পুলিশ জানায়, শাহজালাল মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে ভবঘুরে ছিলেন। চিকিৎসার জন্য পাঠানোর সময় তিনি নান্দাইল থেকে পালিয়ে কক্সবাজার চলে এসেছিলেন। তবে কক্সবাজারে তাঁর মৃত্যু কীভাবে ঘটেছে, তা নিয়ে রহস্য রয়েছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান বলেন, পরিবারের সঙ্গে কথা বলে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রেললাইনের পাশে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন ৯৯৯-এ খবর দেন। বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। মরদেহটি ছিল হলুদ টি–শার্ট ও কালো প্যান্ট পরিহিত, চেহারা বিকৃত এবং দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।

ওসি ইলিয়াস খান বলেন, পরিচয় শনাক্ত হলেও মৃত্যু রহস্যজনক। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন নাকি অন্য কোনো কারণ আছে, তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে জানা যাবে। তবে শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

লিংক রোড এলাকার ব্যবসায়ী কামাল আহমেদ বলেন, এ এলাকা দিনে-রাতে ব্যস্ত, ২৪ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল করে। এমন এলাকায় হত্যা করা প্রায় অসম্ভব। সম্ভবত শহরের অন্যত্র ঘটনা ঘটিয়ে লাশ এখানে ফেলা হয়েছে।

নিহত শাহজালালের ছোট ভাই মাযহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই বছর আগে ভাইকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে নেওয়ার সময় তিনি পালিয়ে যান। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি। সাত দিন আগে নান্দাইলের এক শিক্ষক কক্সবাজারে ভাইকে ভবঘুরে অবস্থায় দেখেন। পরিচয় পাওয়ার পর পরিবারের লোকজন কক্সবাজার যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আজ নান্দাইল থানার পুলিশ ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানালে আমরা হতবাক হয়েছি।’

মাযহারুল ইসলাম বলেন, ২৩ বছর বয়সে ভাই অস্ত্র মামলার আসামি হয়ে পুলিশি হেফাজতে ছিলেন। এরপর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তিন বছর থাকার সময় মানসিক ভারসাম্য হারান। আড়াই বছর আগে কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হলেও সুস্থ হননি। তাই দুই বছর আগে পাবনা মানসিক হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল।

শাহজালাল অবিবাহিত ছিলেন। মাযহারুল জানান, তাঁরা রাতেই কক্সবাজারে পৌঁছে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরবেন।