Thank you for trying Sticky AMP!!

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জয় মাহমুদ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে জিম্মি জাহাজে থাকা একজন

‘আর কথা নাও হতে পারে’ বলার ৫ ঘণ্টা পর মা শোনেন, ছেলে জয়ের জাহাজ দস্যুর কবলে

‘মা, আর কথা নাও হতে পারে। আমার ফোনে এমবি থাকবে না। হয়তো এক-দুই মাস কথা নাও হতে পারে। ঈদে যা কেনা লাগে তোমরা কিনে নিয়ো।’ গতকাল মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে সর্বশেষ মা আরিফা বেগমের সঙ্গে মুঠোফোনে এ কথা হয় ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জয় মাহমুদের (২৪)।

জয় মাহমুদ নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের সালাইনগর গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে। ২০২১ সালে জাহাজে চাকরি নিলেও ২০২৩ সালে কেএসআরএম কোম্পানির জাহাজ এমভি আবদুল্লাহতে নাবিক হিসেবে যোগ দেন তিনি। মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে সোমালিয়ার জলদস্যুরা ভারত মহাসাগরে জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং জাহাজে থাকা জয় মাহমুদসহ ২৩ বাংলাদেশিকে জিম্মি করে।  

আজ বুধবার দুপুরে সালাইনগর গ্রামে জয় মাহমুদের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ গতকাল বিকেল ৪টার দিকে জয় মায়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন। মা জানিয়েছিলেন, তিনি জয়ের আসার অপেক্ষায় আছেন। বাড়িতে এলে তাঁর বিয়ের আয়োজন করবেন।

Also Read: জলদস্যুরা জাহাজে উঠে সবাইকে এক জায়গায় করার পর ফাঁকা গুলি ছোড়ে

মা আরিফা বেগম বলেন, ‘কথা বলার সময় ছেলে বলেছিল সে আফ্রিকা অতিক্রম করছে। সে ভালো আছে। এর পাঁচ ঘণ্টা পরই লোকমুখে আমি ছেলের জাহাজ ডাকাতের কবলে পড়ার কথা শুনি। পরে অনেক চেষ্টা করেও আর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।’

জয়ের বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলে মাত্র চার মাস হলো জাহাজে উঠেছে। এমনিতেই সাগরে চাকরি করতে ভয় পাচ্ছিল। এখন ডাকাতের কবলে পড়ে সে কী অবস্থায় আছে, তা ভাবতেই বুক ফেটে যাচ্ছে। এখন আমি কিছুই চাই না, শুধু ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেতে চাই। সরকার ও জাহাজের মালিক যেন আমার ছেলেসহ তার সঙ্গে থাকা সবাইকে দ্রুত মুক্ত করে আনে।’

Also Read: ছেলের আকুতি ‘মা, মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে, কথা বলতে পারব না’

জয় মাহমুদের চাচাতো ভাই মারুফ হোসেন দাবি করেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার কিছু আগে জয় মাহমুদের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়। তখনই তিনি জলদস্যুদের আক্রমণের কথা বলেছিলেন। তবে জয়ের অনুরোধে তিনি তাঁর বাবা-মাকে বিষয়টি বলেননি। সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিটে জয় মাহমুদ তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে জানান, জলদস্যুরা তাঁদের মুঠোফোন কেড়ে নিচ্ছে। তিনি হয়তো আর কথা বলতে পারবেন না। সবাইকে দোয়া করতে বলেন।