বানরের গলায় শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। গতকাল রোববার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তুলসীগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন এলাকায়
বানরের গলায় শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। গতকাল রোববার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তুলসীগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন এলাকায়

দলছুট বানর শিকল দিয়ে বাড়িতে বেঁধে রেখেছেন, বিক্রি করতে চান ১২ হাজার টাকায়

বানরটির গলায় লোহার শিকল; গাছে বাঁধা। ছটফট করছে। কাছে গিয়ে দেখা যায়, বানরটির কপালে আঘাতের চিহ্ন। একটি কলা পেয়ে বানরটি সঙ্গে সঙ্গে খাওয়া শুরু করে। গতকাল রোববার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তুলসীগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন এলাকার একটি বাড়িতে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।

ওই বাড়ির মালিক আক্কেলপুর পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী আবেদ আলী। সপ্তাহ দুয়েক ধরে তিনি বানরটি নিজ বাড়িতে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই সপ্তাহ আগে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের ছাদে দলছুট একটি বানর হাজির হয়। উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বানরটিকে কলা ও পাউরুটি খেতে দিতেন। দু–তিন দিন বানরটি উপজেলা পরিষদের ভবন, গাছ ও মাঠে ঘোরাঘুরি করে বেড়ায়।

দিপু নামের উপজেলা পরিষদের এক কর্মচারী বলেন, ‘প্রায় দুই সপ্তাহ আগে এক সকালে বানরটি ইউএনও স্যারের কার্যালয়ের ছাদে ঘোরাঘুরি করছিল। আমরা বানরটিকে কলা-রুটি খেতে দিয়েছি। বানরটি দু-তিন দিন উপজেলা পরিষদ এলাকায় ছিল। পরে জানলাম, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী আবেদ আলী বানরটি কৌশলে ধরে নিয়ে গেছেন।’

আজ সোমবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করছিলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আবেদ আলী। এ সময় বানরটির বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। বানরটির খাবারের জন্য প্রতিদিন তাঁর ১০০ টাকা খরচ হচ্ছে। একপর্যায়ে তিনি ১২ হাজার টাকায় বানরটি বিক্রি করতে চান বলে জানান। পরে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে আবেদ আলী বলেন, ‘আমি বানর পালার জন্য ধরেছি; বিক্রি করব না। ১০–১২ দিন আগে উপজেলা পরিষদে কলা খেতে দিয়ে বানরটিকে ধরেছি। তখন বানরটি ছোটাছুটি করতে গিয়ে গ্রিলের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এ কারণে বানরের কপালে একটু আঘাত লেগেছে।’

এ বিষয়ে জয়পুরহাট বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ‘বন্য প্রাণী আটকে রাখা অপরাধ। বানরটি শিকল পরিয়ে আটকে রাখার কথা জানি না। প্রাণীটিকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা বন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।’