
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় পুকুরে পুকুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি কুমির। বিশাল আকৃতির এই কুমির কীভাবে এল, তা নিয়ে নানা কৌতূহল ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত কুমিরটিকে একাধিক পুকুরে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
হাতিয়ার ওই গ্রামের খুব কাছেই মেঘনা নদী। গ্রামের আজমারদোনা খাল মেঘনার সঙ্গে যুক্ত। এলাকাবাসীর ধারণা, জোয়ারের সময় মেঘনা নদী থেকে খাল দিয়ে কুমিরটি ওই এলাকায় এসে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে এটিকে লোকালয়ে দেখা যাচ্ছে। তবে কুমিরটি লোনাপানির নাকি মিঠা পানির সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রওনা দিলেও এখনো কমিরটি উদ্ধার করতে পারেননি।
সর্বশেষ কুমিরটি দেখা যায় হাতিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাসুদুল ইসলাম ওরফে শরীফের বাড়ির পুকুরে। স্থানীয় বন বিভাগের স্থানীয় এক কর্মকর্তা এলাকা ঘুরে গেছেন। সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছেন। তাঁরা কুমিরটিকে উদ্ধারে পদক্ষেপ নেবেন বলে জানা গেছে।
মাসুদুল ইসলাম গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, তিন দিন আগে তাঁদের বাড়ির উত্তর পাশে গিরিওয়ালাদের বাড়ির লাকড়ি রাখার ঘরে প্রথম কুমিরটি দেখা যায়। তাঁরা লাঠিসোঁটা ও টেঁটা নিয়ে ধাওয়া করেন। এরপর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুব রশিদের বাড়ির পুকুরে সেটি নেমে যায়। সেখান থেকে গতকাল সকালে তাঁদের পুকুরে আসে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত পুকুরের চারপাশে পানিতে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় প্রাণীটিকে।
কুমিরটি কীভাবে আসতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদুল ইসলাম ধারণা করেন, কিছুদিন আগে প্রবল বর্ষণ ও জোয়ার হয়েছে, তখন হয়তো জোয়ারের পানির সঙ্গে কুমিরটি খাল হয়ে এখানে এসেছে। খবর পেয়ে বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা এসে কুমিরটি দেখে গেছেন। কুমিরটির পিঠের দিক কিছুটা হলদে এবং খাঁজকাটা। লম্বায় চার থেকে পাঁচ হাত।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মাসুদুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে অনেকে উৎসাহী হয়ে টর্চলাইট নিয়ে কুমিরটি দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু দেখা যায়নি। আজ সকালে তিনিও পুকুরের চারপাশে ঘুরে দেখেছেন অনেকক্ষণ, কিন্তু কুমিরটিকে দেখেননি। এ অবস্থায় পুকুরে এখনো কুমিরটি রয়েছে কি না, সেটি বোঝা যাচ্ছে না। বন বিভাগের লোকেরা এলে তাঁরা খুঁজে দেখতে পারেন।
নোয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম আরিফ-উজ-জামান প্রথম আলোকে বলেন, পুকুরে কুমিরের দেখা মেলার খবর শুনেছে। বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা ও নলচিরা রেঞ্জ কর্মকর্তা আল আমীন গাজীর সঙ্গে তিনি ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। কুমিরটির দেখা পেলে তাঁরা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।