সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

লক্ষ্মীপুরের এ উপজেলায় পাঁচবার আসেন খালেদা, দ্বিগুণ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন দুবার

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা নিয়ে গঠিত লক্ষ্মীপুর-২ আসন। এটি এখনো খালেদা জিয়ার আসন নামে পরিচিত। এ আসন থেকে পরপর দুবার নির্বাচিত হন তিনি। প্রতিবারই তিনি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে অন্তত দ্বিগুণ ভোট পেয়েছেন। এ উপজেলায় দলীয় কাজে পাঁচবার সফরও করেছেন তিনি।

নির্বাচনের পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রায়পুর আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন খালেদা জিয়া। ১৯৯৬ সালে তিনি ভোট পান ৫৯ হাজার ৫৪টি। ওই নির্বাচনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পান ২৬ হাজার ৯৩৭ ভোট। আর ২০০১ সালের নির্বাচনে ভোট পান ১ লাখ ২৩ হাজার ৫২৬টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোট ছিল ৪৪ হাজার ৯৭৪টি। অর্থাৎ দুবারই নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে তাঁর ভোটের ব্যবধান ছিল দ্বিগুণ।

রায়পুর উপজেলার কয়েকজন প্রবীণ বাসিন্দা জানান, নির্বাচনী প্রচারণায় খালেদা জিয়ার উপস্থিতি ছিল ব্যতিক্রমী। তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরাসরি গণসংযোগ করতেন। এ কারণে স্থানীয় মানুষ তাঁকে জাতীয় নেতার বাইরেও নিজেদের এলাকার প্রতিনিধি ভাবতে শুরু করেন। এর ফল ভোটে দেখা যায়।

দলীয় নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, ১৯৯৬ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলনের পটভূমিতে। সে সময় খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে ছিল। এরপরও লক্ষ্মীপুর-২ আসনে তাঁর বিজয় দলটির রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতার প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত হয়। এর প্রভাবেই ২০০১ সালের নির্বাচনের পর চার–দলীয় জোটে ক্ষমতায় আসে বিএনপি।

রায়পুর উপজেলা বিএনপির তৎকালীন (১৯৯৬ সাল) সাধারণ সম্পাদক হোসেন আহমদ বাহাদুর বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া নিয়মিতভাবে এলাকার নেতা-কর্মীদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। সাংগঠনিক বিষয়ে তাঁদের মতামতকে গুরুত্ব দিতেন। এলাকার উন্নয়ন, রাজনৈতিক মামলা-মোকদ্দমা এবং আন্দোলন-সংগ্রামে নেতা–কর্মীদের ভূমিকা—সবকিছুই তাঁর রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হতো।’

উপজেলা বিএনপি নেতা-কর্মীদের দাবি, লক্ষ্মীপুরের রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার এই নির্বাচনী ইতিহাস এখনো বিএনপির নেতা–কর্মীদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচিত। জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, লক্ষ্মীপুর জেলার মধ্যে রায়পুরকে তিনি খুব বেশি গুরুত্ব দিতেন। তিনি এ উপজেলায় পাঁচবার আসেন। সর্বশেষ আসেন ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। সাংগঠনিক বিষয় থেকে শুরু করে, উন্নয়ন, আন্দোলন-সংগ্রামের সিদ্ধান্তে তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দিতেন তিনি। এ কারণেই এ আসনে তাঁর জনপ্রিয়তা দীর্ঘদিন ধরে অটুট রয়েছে।