
ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বঞ্চিত প্রার্থীদের সমর্থকেরা আন্দোলন করছেন। আজ দ্বিতীয় দিনও বঞ্চিত প্রার্থীদের সমর্থকেরা রেললাইনে অবস্থান করছেন।
গতকাল শনিবার বিকেল ৪টা থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলনের জেরে আজ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নেত্রকোনার জারিয়া ঝানজাইলগামী বলাকা কমিউটার ট্রেন গফরগাঁও স্টেশনে এসে আটকা পড়ে। প্রায় ২ ঘণ্টা পর আজ সকাল ১০টা ৫৬ মিনিটে এই স্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে ট্রেনটি।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ময়মনসিংহের পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম।
গতকাল বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরিত মনোনয়নপত্রে ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামানকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়। মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে আগুন দিয়ে অবরোধ করেন মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের সমর্থকেরা।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ময়মনসিংহের পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, রেলপথের বিভিন্ন জায়গায় আগুন দেওয়ায় লাইন মেরামত শেষে গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছিল। পরে পুনরায় গোলন্দাজ গেট এলাকায় রেলপথে আগুন দেওয়ায় রাত ১টার পর আটকে পড়া ১০টি ট্রেন ছেড়ে যায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে গফরগাঁও উপজেলার শিবগঞ্জ রোড রেলক্রসিং এলাকায় বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মী আগুন দেন। এ ছাড়া উপজেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টেও আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে গফরগাঁও পৌর বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রেলপথের বিভিন্ন স্থানে আগুন দেওয়ার কারণে রেললাইনের দুই পাশের বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন আটকে পড়ে।
দলীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, এ আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়া মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ছাড়াও আরও পাঁচ নেতা বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে প্রচারে ছিলেন। তাঁরা হলেন: দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, এ বি সিদ্দিকুর রহমান, সদস্য মুশফিকুর রহমান, আল ফাত্তাহ ও মোফাখখারুল ইসলাম। গতকাল মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী এ বি সিদ্দিকুর রহমান ও মুশফিকুর রহমানের সমর্থকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিভিন্ন স্থানে সড়কে আগুন দিয়ে দলীয় প্রার্থীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, ‘রাত ২টা পর্যন্ত আমরা মাঠে থেকে রাস্তা ক্লিয়ার করি। সকালে এক জায়গায় আগুনের খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে। আজ দলীয় নেতা-কর্মীদের বুঝিয়ে তাঁদের কর্মীদের শান্ত করতে বলা হবে। সেটা না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’