খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দৌড়ে ছিলেন বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান, সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব আলীসহ অন্তত ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে কম আলোচিত ও নতুন মুখ হিসেবে পরিচিত মো. রশীদুজ্জামান মনোনয়ন পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন।
বর্তমানে দলে মো. রশীদুজ্জামানের কোনো পদ নেই। তিনি একসময় পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যসচিব ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জামানত হারানোর পর থেকে দলের মধ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন মো. রশীদুজ্জামান। পাইকগাছা উপজেলায় রশীদুজ্জানের পরিচিতি থাকলেও কয়রা উপজেলায় তাঁর তেমন পরিচিতি নেই। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে কয়রা উপজেলার মানুষের মুখে মুখে এখন একটাই প্রশ্ন—কে এই নেতা, যিনি বাঘা বাঘা নেতাকে টপকে মনোনয়ন পেয়েছেন।
খুলনা-৬ আসনের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে বর্তমান সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান মনোনয়নবঞ্চিত হবেন, এটা তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল হকের ছেলে রাশেদুল ইসলাম (রাশেদুজ্জামান রাসেল নামে পরিচিত) মনোনয়ন পাবেন। গতকাল রোববার বিকেলে ঢাকায় দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা শুরুর পর থেকে কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রাশেদুল ইসলামের অনুসারী ও কর্মী-সমর্থকেরা মিষ্টিও বিতরণ করেন। শেষ পর্যন্ত নাম ঘোষণা হওয়ার পর এবং প্রকাশিত তালিকায় দেখা গেল মো. রশীদুজ্জামানের নাম।
এ নিয়ে গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মো. রশীদুজ্জামান তাঁর ফেসবুক পোস্টে বলেন, নাম নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নেই। তিনিই খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন।
কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিশিত রঞ্জন বলেন, বিকেল থেকে নানা বিভ্রান্তির পর সন্ধ্যানাগাদ সবাই নিশ্চিত হন, রাশেদুজ্জামান রাসেল নন, দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মো. রশীদুজ্জামান।
বর্তমান সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামানের মনোনয়ন না পাওয়ার বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, নদীর বেড়িবাঁধ মেরামতকাজ পরিদর্শনে গেলে সংসদ সদস্যের গায়ে জনতার কাঁদা ছোড়া, শোক দিবসের এক সভায় আওয়ামী লীগ নেতাকে অপমানসহ নানা কারণে সমালোচনায় পড়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে সংসদীয় এলাকায় ঠিকাদারির কাজ নিয়ন্ত্রণ ও নিজের মতের বিপক্ষ আওয়ামী লীগের নেতাদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ ছিল। এসব কারণে হয়তো আক্তারুজ্জামানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে কেন মনোনয়ন দিল না, দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বই তা ভালো জানে। আমি এই মুহূর্তে এসব নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’